স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের বিক্ষোভ, পুলিশের বাধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম | প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের বিক্ষোভ, পুলিশের বাধা

রাজধানীতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।  রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেও হাইকোর্ট মাজার গেটে গিয়ে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় মিছিলটি।

ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা দাবি করছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদে জড়িতদের বিচার না করে তাদের সেফ এক্সিট (নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ) দেওয়া হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে তারা।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদি বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দেশের আনাচে-কানাচে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ সরকার নির্বিকার।’

ইনকিলাব মঞ্চের চার দফা দাবি:
১. জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ার বিস্তারিত রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে।
২. সব পাবলিক প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের দোসরদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. চট্টগ্রামে নেভি ও অন্যান্য বাহিনীর মাধ্যমে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পালাতে সহায়তা করা হয়েছে—তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. যেসব আমলা ও সামরিক কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে মদদ দিচ্ছেন, তাদের অবিলম্বে শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

বিক্ষোভকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে মিছিল শুরু করলেও হাইকোর্ট মাজার গেটে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়। এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা ‘জাগো জাগো জনতা, প্রশ্ন কর ক্ষমতা’, ‘কত টাকা খাইছে নেভি, জবাব দে তাড়াতাড়ি’, ‘প্রশাসন শুদ্ধ কর, পুলিশের বিচার কর’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ উসমান বিন হাদি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছি, কিন্তু সরকার ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো নৌবাহিনী ৬২৬ জন সন্ত্রাসীকে নিরাপত্তা দিয়েছে। আমরা আর নীরব থাকব না, এখন থেকে সুশীল সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তুলব।’

সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের আন্দোলন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। বিক্ষোভের কারণে নগরজীবনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। সরকার কিভাবে এই সংকটের সমাধান করবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে