মহাদেবপুরে অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে গরু

এফএনএস (রওশন জাহান; মহাদেবপুর, নওগাঁ) : | প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০১:২০ পিএম
মহাদেবপুরে অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে গরু

নওগাঁর মহাদেবপুরে অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে অসহায় কৃষকের একের পর এক গরু। ফলে দরিদ্র কৃষকেরা পথে বসছেন। সন্তান স্নেহে লালন করা গরু হঠাৎ করেই মারা যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। গত দুমাস ধরে এই অবস্থা চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানেন না কিছুই। শনিবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের কুন্দনা গ্রামে গিয়ে জানা যায় গত দু’মাসে ওই গ্রামের মোট ১১টি গরু মারা গেছে। গরু মারা যাবার খবর সংগ্রহ করতে সাংবাদিক গ্রামে এসেছেন শুনে অনেকেই ছুটে আসেন। গ্রামের পাহান পাড়ার রতন পাহানের স্ত্রী প্রার্থনা পাহান জানালেন আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় তার একটি বোকন গরুর হঠাৎ করে পেট ফুলে ওঠে। তার পর মুখ ও পিছন দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি মারা যায়। গরুটির দাম কমপক্ষে ৮০ হাজার টাকা। তার আগের দিন গভীর রাতে একই ভাবে মারা যায় প্রতিবেসী সন্তোষ পাহানের ছেলে নারায়ন পাহানের দুইটি গরু। এরমধ্যে একটি বিদেশী জাতের ও একটি দেশী। গরু দুটির দাম হবে প্রায় দুই লাখ টাকা। এদিন রাতে মারা যায় এইগ্রামের কাজী দুলাল হোসেনের ছেলে কাজী সজল হোসেনের একটি গরু। এর দাম প্রায় ৪০ হাজার টাকা। এই গ্রামের আলহাজ্ব ফারুখ হোসেনের ছেলে আদম শফিউল্লাহ জানান, নয় দিন আগে একই ভাবে তার একটি বিদেশী সিন্ধু জাতের গরু মারা গেছে। এর দাম এক লাখ টাকার বেশি। প্রতিবেসী অনুকুল চন্দ্রের স্ত্রী চন্দ্রনা রাণী জানালেন ১০ দিন আগে তার একটি বোকন গরু মারা গেছে। এর দাম ৩৫ হাজার টাকা। গোপাল চন্দ্রের স্ত্রী রাধা রাণী জানালেন ১০ দিন আগে তারও একটি বোকন গরু মারা গেছে। তার দাম ৪০ হাজার টাকা। বিপ্লবের স্ত্রী সুবর্ণা জানালেন তারও একটি বোকন বাছুর মারা গেছে। দাম হবে ২০ হাজার টাকা। কাজী এবার উদ্দিনের ছেলে কাজী মোনায়েম হোসেন জানান, দুসপ্তাহ আগে তার একটি বিদেশী গরু ও কাজী জেসমিন আকতারের একটি বিদেশী গরু মারা গেছে। গরু দুটোর দাম হবে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা। এছাড়া শ্রী মঙ্গলার স্ত্রী অনিকা রাণী জানালেন দুমাস আগে একইভাবে তার একটি বাছুর মারা গেছে। দাম হবে ২০ হাজার টাকা। তারা জানান, হঠাৎ করেই তাদের গরুগুলো অসুস্থ্য হয়ে পড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যাচ্ছে। ডাক্তার ডাকার সময় পাচ্ছেন না। এইগ্রামের গরুর খামারি আদম শফিউল্লাহ জানান, তার খামারের কোন গরু খামারের বাইরে যায়না। সুতরাং ফুড পয়জনিং হবার কোনই সম্ভাবনা নেই। তিন দিন আগে তার একটি বাছুর অসুস্থ্য হয়েছি। সময়মত এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে একটু সুস্থ্য হয়েছে। জানতে চাইলে মোবাইলফোনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহবুব হাসান বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি জানান, আলুক্ষেত থেকে আলু তোলার পর আলুগাছের পাতা অনেকে গরু ছাগলকে খাওয়ায়। এই আলুর পাতায় কীটনাশক প্রয়োগ করা থাকে জন্য এগুলো খেয়ে গরু মারা যেতে পারে। কিন্তু ভূক্তভোগীরা বলছেন তাদের গ্রামে এখনও আলু তোলা শুরুই হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আরিফুজ্জামান জানালেন তিনি ওইগ্রামে একটি টিম পাঠাবেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে