লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ৪ জনের সলিলসমাধি হয়েছে। এ ছাড়া ৯ জনের নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন গোবিন্দপুর গ্রামের ফিরোজ শেখের ছেলে ইনসান শেখ (১৯), আক্কাস আকনের ছেলে আবুল বাসার আকন (২৮), মজুমদারকান্দি গ্রামের হালিম হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদার ও শাখারপাড় গ্রামের ফারুক মোল্যার ছেলে সজিব মোল্যা (৩১)। ভুক্তভোগীদের গ্রাম ঘুরে জানা যায়, উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামের মনির দালালের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা এবং মুকসুদপুর উপজেলার বাবলাতলা গ্রামের রফিক দালালের ১৪ লাখ টাকার চুক্তিতে দুই মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল নিহতরা। এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে লিবিয়ার বেনগাজি থেকে গেম দেওয়া হয়েছিল এদের। ২ ফেব্রুয়ারি পরিবারের লোকজনের কাছে ফোনে এবং ফেসবুকে ছবি দেখে ৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত ইনসানের বাবা ফিরোজ শেখ বলেন, ‘মনির দালাল টাকা নিয়েও তার দেওয়া কথা রাখেননি। ত্রিপোলি থেকে গেম দেওয়ার কথা থাকলেও বেনগাজি থেকে গেম দেন তিনি। কাঠের বোটে গেম দেওয়ার কথা থাকলেও প্লাস্টিকের বোটে গেম দেন। এ কারণেই আমার ছেলের করুণ পরিণতি। আমি মনির দালালের বিচার চাই।’ নিহত বাসার আকনের ভাই বাচ্চু আকন বলেন, ‘আমার ভাই দেড় বছর আগে ১৪ লাখ টাকার চুক্তিতে মহেন্দ্রদী গ্রামের স্বপন দালালের মাধ্যমে কৃষি ভিসায় যায়। পরে সে নিতে অপারগ হলে বাধ্য হয়ে লিবিয়া দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। লিবিয়া নিয়ে যাওয়ার পর সে গেম দিতে পারে নাই। পরে মনির দালালের মাধ্যমে নতুন করে চুক্তি করে আমার ভাই এবং ভাগ্নে টিটু হাওলদারকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার গেম দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেলেও ভাগ্নের কোনো সন্ধান পাইনি। তবে দালাল রোববার ভয়েস মেসেজ দিয়ে জানিয়েছে ধৈর্য ধরেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করেন ১৭ জন চিকিৎসাধীন এবং ৩ জন পুলিশের কাছে আটক আছে। দেখা যাক কী হয়।’ নিহত সুজন হাওলাদারের শ্যালক তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভগ্নিপতির খারাপ খবর পেলেও আমার ভাই কুদ্দুস বেপারীর কোনো খবর পাইনি।’ নিখোঁজ অন্যরা হলেন সুন্ধিকুরি গ্রামের আশিষ কীর্তনিয়া (২৬), সাগর বিশ্বাস (২৪), নিপুণ কীর্তনিয়া (২২), অনুপ সরদার (২৩), অহিদুল হাওলাদার (২৫), মারুফ বেপারীর (১৮) এবং সাগর বাড়ৈ। তাদের পরিবার এ তথ্য জানিয়েছে। রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদ খান জানান, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।