গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নীলফামারীতে কেজিতে আলুর দাম কমেছে ২০ টাকা। আলুর ফলন বাম্পার হলেও বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চাষিদের মাঝে নেমে এসেছে চরম হতাশা। অনেকেই ঋণ নিয়ে আবার কেউ গরু ছাগল বিক্রি করে আলু চাষ করেছেন। এমন স্বল্প দামের কারণে কেউ কেউ জমি থেকে আলু তোলাও বন্ধ রেখেছেন। আলু ব্যবসায়ীরা বলছেন,বাজারে সরবরাহ বেশি হওয়ায় আলুর দাম কমে গেছে। চাষিরা বলছেন, আলু চাষে গত কয়েক বছর ধরে ভালো লাভের মুখ দেখলেও এ বছরের পরিস্থিতি ভিন্ন। আগাম আলুতে বাজার সয়লাব হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন এ জেলার আলু চাষিরা। আলুর ভরা মৌসুম শুরু হওয়ার অন্তত ২০ থেকে ২৫দিন আগেই তারা মাঠ থেকে আলু তুলছেন। নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের কৃষক নাতিকুল ইসলাম বলেন,আমি তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। সেই আলু চাষাবাদ করতে, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ আর শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ তো দূরের কথা,বিঘা প্রতি লোকসান হয়েছে ১৩ হাজার টাকা করে। কামারপুকুর অসুরখাই গ্রামের চাষি হবিবর রহমান বলেন,গত বছর এই সময়ে কেজি প্রতি আলু বিক্রি করেছি ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায়। আর এ বছর বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা কেজি দামে। অনেকের উৎপাদন খরচ উঠছে না। ফলে তাদের মাঝে বিরাজ করছে চরম এক হতাশা। সৈয়দপুর উপজেলার শ্বাসকান্দর এলাকার চাষি মোকলেছুর রহমান বলেন, ৮ বিঘা জমিতে এবার কার্ডিনাল আলু চাষ করেছেন। বীজ আলুর কেজি ক্রয় করেছেন ৯০ টাকা দরে। কীটনাশক,সারসহ অন্যান্য খরচও হয়েছে বেশি। এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন খরচ পড়েছে কেজি প্রতি আলুর ২০ টাকা। বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের পোড়ারহাট এলাকার চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আলু চাষ করে পড়েছে লোকসানের মুখে। আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী ঝন্টু মিয়া বলেন, আমরা আলুর কেজি ক্রয় করছি ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা দরে। আর বিক্রি করছি ১৪ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন আলুর সরবরাহ অনেক বেশি হওয়ায় বাজারে দাম পড়ে গেছে। নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, চাষিরা কেন হতাশ হবেন। দাম কমলেও ফলন হয়েছে বাম্পার। এমন ফলনে তাদের লোকসান কেন হবে। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুবন বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার বেশি আলুর চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। দাম কম হলেও লোকসান হওয়ার কথা না।