প্রশাসনের নাকের ডগায়, কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে প্রধান সড়কে কাজে অনিয়ম, ধীরগতি, ধুলায় অতিষ্ট জনজীবন। চিলমারী-হরিপুর সড়ক উন্নয়ন ও নির্মানে অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কর্তৃপক্ষ নিরব। নিয়ম আর নীতিকে তোয়াক্কা না করেই অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে আর নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিজেদের খেয়াল খুশি মতো চালিয়ে নিচ্ছে সড়কের কাজ। বালি ও খোয়া মিশ্রনের পর নিয়ম মোতাবেক পানি দেয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্টদের কোন নজরদারী না থাকায় ধুলায় অতিষ্ঠ জনজীবন। অভিযোগ উঠেছে বালি ও খোয়া মিশ্রণে পরিমানের চেয়ে বালি এবং মাটির পরিমান বেশি দেয়া হয়েছে। জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার হেড কোয়াটার-পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইঃ ১২২০-৫২৩০মিঃ) উন্নয়ন করণ (সড়ক আইডি নং-১৪৯০৯২০০৬) এবং চিলমারী উপজেলা হেড কোয়াটার পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেই: ০০ মিঃ থেকে ১২০০ মিঃ) সড়ক উন্নয়ন করণ, ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ ০২ হাজার ৮৩২ টাকার কাজ টি পায় মীর হাবিবুল আলম নামে এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজ পাওয়ার পর থেকে হাত বদল শুরু হয় বলে জানাযায় বিভিন্ন সুত্রে। হাত বদলের কারণে কাজের ধীর গতির সাথে সাথে বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয় নেন সংশ্লিষ্টরা। চিলমারী অংশে উপজেলার মাটিকাটা মোড় থেকে চিলমারীর সীমান্ত পর্যন্ত ১২০০ মিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু হলেও শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয় নেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন। বালি ও খোয়া মিশ্রনে নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করেই বালির সাথে মাটি পরিমান বেশি মিশিয়ে তা নিম্ন মানের খোয়ার সাথে মিশ্রণ করে কাজ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। সূত্র মতে বালির পরিমান ১০% এবং খোয়ার পরিমান ৯০% দেয়ার কথা থাকলেও খোয়ার চেয়ে বালি ও মাটির পারিমান বেশি দেওয়া এবং খোয়া নিম্ন মানের কারণে শুরুতে স্থানীয়দের চাপে কাজ বন্ধ করেন তৎকালিন উপজেলা প্রকৌশলী। পরে আবারও বিভিন্ন ক্ষমতার দাপটে অনিয়মের মধ্য দিয়েই কাজ চালিয়ে যান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা মাটিকাটা মোড় থেকে চিলমারী সরকারি কলেজ মোড় ও শরীফেরহাট এলাকায় কিছু অংশে বালি, মাটি ও খোয়া মিশ্রণের কাজ অনিয়মের সাথে শেষ করলেও নিয়ম অনুযায়ী পানি ছিটানোর কথা থাকলেও সেটিও করছেন না সংশ্লিষ্টরা, ফলে ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ রোগী ও বৃদ্ধ। স্থানীয় মানুষসহ পথচারী ও গাড়ি চালকরাও প্রায় সময় দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। কাজের ধীর গতি ও কার্পেটিং কাজ শুরু না হওয়ায় বাড়ছে দুর্ভোগ, অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনসাধারন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুর রহমান পারভেজ বলেন, সড়কের কাজে অনিয়ম হয়েছে আর এটি নিয়ে বেশ কয়েকবার নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলীকে অভিযোগও করা হয়েছিল। মীর হাবিবুল আলম ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার লাইসেন্সে কাজটি হলেও এটি আওয়ামী লীগের কথিত ফ্যাসিষ্ট সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনÑএর পিএস রাশেদ কাজটি করছে। নিয়ম অনুযায়ী পানি দেয়ার কথা থাকলেও পানি দেয়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি তা স্বীকার করে। রাশেদ এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা নেই, আর মুল ঠিকাদারকেও পাওয়া যাচ্ছেনা তিনি সম্ভবত আত্নগোপনে, তবে ওনার প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।