নদী ও মানুষের সম্পর্ক সেই প্রাচীনকাল থেকেই। যেখানে নদী, সেখানেই মানুষ বসতি গড়ে তোলে। নদীর প্রাণ-প্রকৃতি ঘিরে গড়ে উঠে নতুন সভ্যতা। বিশ্বের অনেক দেশেই পর্যটনের মূল আকর্ষণ তাদের নদীকে ঘিরেই। অথচ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হলেও নদী কেন্দ্রিক পর্যটনে এখনো গড়ে ওঠেনি তেমন কোনো কাঠামো। তেমনি নদীবেষ্টিত একটি জেলা চাঁদপুর। পদ্মা মেঘনা ডাকাতিয়া এই তিন নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত চাঁদপুর জেলা শহর। নদী কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার চাঁদপুর। যার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে আমাদের জাতীয় মাছ রুপালি ইলিশ কে ঘিরে। কিন্তু এ বিষয়টি বিগত সময়ে ছিল গুরুত্বহীন, অবহেলিত এবং উপেক্ষিত। এ অবস্থায় পর্যটনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর ফলে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের নৌ ভ্রমণও হতে পারে পর্যটনশিল্প বিকাশের অন্যতম উপকরণ।গত কয়েক বছর ধরে দেশের নদী কেন্দ্রিক পর্যটন গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সে লক্ষ্যে কাজও চলছে।সেই আলোকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার উন্নয়ন পরিকল্পনা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পর্যটন বিষয়ে তিনটি নির্ধারিত উন্নয়ন পরিকল্পনা উপস্থাপনা করাসহ অন্যান্য উন্নয়ন বিষয়েও আলোচনা হয়। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। পর্যটন বিষয়ে পরিকল্পনাগুলো হচ্ছে-তিন নদীর মোহনায় মোলহেডে ‘রিভারভিউ’ তৈরী, জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর পিছনে ‘ডিসি পার্ক’ নির্মাণসহ ডাকাতিয়া নদীর ওপরে ভাসমান রেস্তোরাঁ ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে স্মৃতিময় করার জন্য ‘ক্যাপে-২৪’ নির্মাণ। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, শহরের তিন নদীর মোহনা মোলহেড ঝুঁকিপূর্ন, এতে কোন সন্দেহ নাই। যেহেতু সেখানে রিভারভিউ বড় ধরণের প্রকল্প, যার ফলে সেখানে কাজ করার পূর্বে সবদিক বিবেচনা করে পরিকল্পনা করা হবে। মোলহেডের ঝুঁকি কমাতেই এই ব্যবস্থা করতে হবে। শহর রক্ষায় উল্লেখিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাই। পর্যটন বিষয়ে উপস্তিত বক্তাদের মতামতের আলোকে জেলা প্রশাসক বলেন, আমি মনে করি চাঁদপুরেও আমাদের পরিকল্পিত এই ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আমি থেমে যাবো না। আমি শিগগিরই কাজ করবো। তবে আমার ওপরও শুধু নির্ভরশীল হয়ে থাকা ঠিক হবে না। সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের স্বপ্ন ও চিন্তা চেতনা আরো প্রসারিত করতে হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তাফিজুর রহমান এর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্ল্যাহ সেলিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. মো. শাহজাহান মিয়া, এলজিইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান কবির, জেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওয়াসি উদ্দিন আহমেদ, জেলা জজ আদালতের আইন কর্মকর্তা কোহিনুর বেগম। আরো বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জহির উদ্দিন বাবর, সাবেক সভাপতি অ্যাড. সেলিম আকবর, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লে. সোয়েব, প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা, সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল রুশদী, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাহাদাত হোসেন শান্ত, সময় টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক আহমেদ, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, এখন টিভির জেলা প্রতিনিধি তালহা যোবায়ের, এনটিভির জেলা প্রতিনিধি শরীফুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান আকাশ, ছাত্র প্রতিনিধি রাহাত, মুজাহিদ সিয়াব, তামিম খান, নারী উদ্যেক্তা রাশেদা আক্তার।