বাউফলে বখাটের উৎপাতে জীবন দিল শিক্ষার্থী

এফএনএস (হারুন অর রশিদ; বাউফল, পটুয়াখালী) :
: | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম : | প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
বাউফলে বখাটের উৎপাতে জীবন দিল শিক্ষার্থী

পটুয়াখালীর বাউফলে বন্ধুদের নিয়ে হোটেলে নাস্তা খাওয়ার সময় এক বখাটের উৎপাতের ঘটনায় ক্ষোভে ইতি দাস (২০) নামের এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতি রানী দাস বরিশাল বিএম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সে দাসপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের সমির দাসের কন্যা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় বাউফল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। নিহত ইতি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ইতি ঘটনার দিন সোমবার সরেস্বতী পুজা উপলক্ষে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। দুপুর ১২ টার দিকে তার কয়েক বন্ধুদের নিয়ে নাস্তা খেতে বাউফল পৌর শহরের পাবলিক মাঠ সংলগ্ন ঢাকাইয়া ফ্যাস্টফুড নামক একটি রেস্টুরেন্টে যান। তার প্রেমিকের বাড়ি পাশ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলায়। খাবার ফাকে রেস্টুরেন্টে তারা আলাপচারিতার সময় তাদেরকে বাউফল উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মহসিন হাওলাদারের ছেলে কথীত ছাত্রদল নামধারী বখাটে হৃদয় রায়হান নানা ভাবে বিরক্ত করতে থাকে। পরে হৃদয় রায়হান তার কয়েক সহপাঠিদের ডেকে এনে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হেয়নস্ত ও ইতির সামনে তার বন্ধুরের লাঞ্চিত করে।

একপর্যায়ে হৃদয় রায়হান ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে ঘটনাটি জানায়। কিন্তু তারা হৃদয় রায়হানের ভয়ে ওই রেস্টুরেন্টে না গিয়ে ৯৯৯ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে বাউফল থানার এসআই শাহিন এসে ইতি ও তার প্রেমিককে থানায় নিয়ে যায় এবং বিকাল ৪টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। রাতের খাবার খাওয়ার জন্য তাকে ডেকে সারা না পেয়ে দোতলায় গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তার মা। তিনি চিতকার করলে আশেপাশের লোকজন এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইতি দাসের পরিবারের লোকদের দাবী বখাটে হৃদয় রায়হান তার কয়েক সহপাঠিদের ডেকে এনে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হেয়নস্ত ও ইতির সামনে তার বন্ধুরের লাঞ্চিত করার ঘটনায় অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনা ছাড়া আত্মহত্যা করার অন্য কোন কারন নেই। ঘটনার সাথে জড়ীতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার সময়ে উপস্থিত ঢাকাইয়া ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টের কর্মচারি হানিফ বলেন, ঘটনার দিন তিনটা মটরসাইকেলে ৪জন ছেলে আসে। একটু পরে একটা মেয়ে আসলে তাদেরকে নাস্তা দেই। কিছুখন পরে স্থানীয় কয়েকটি পোলাপান এসে তাদেরকে বাহিরে নিয়ে যায়। পরে বাহিরে তাদের সাথে তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে মেয়েটিকে ভিতরে বসিয়ে রাখে। অনেক পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। তার পরে কি হয়েছে জানিনা।এ ঘটনায় হৃদয় রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, ওই মেয়েকে ও ছেলেকে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়েছি। পরে তাদেরকে নিয়ে যেওয়ার জন্য পরিবারের লোকদের খবর দিয়েছি। কিন্তু তারা না এসে উল্টো পুলিশ পাঠায়। এতে বিষয়টা জানাজানি হয় বেশি। একপর্যায়ে মেয়েটা কান্না করতে করতে বাসায় চলে যায়। ইতির কয়েক বান্ধবীরা বিচার দাবী করে বলেন, ইতি  খুব হাস্যমুখ এবং আড্ডা প্রিয় মানুষ ছিল। সামান্য কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারেনা। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, লাশ উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাউফল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে