টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমা মাঠে হামলার শিকার হয়ে নিহত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের শহীদ লুৎফর রহমান সরণির (থানা রোড) সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সাদপন্থি তাবলিগ সাথী মিজানুর রহমান সুমনের (৩৮) রুহের মাগফেরাতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আবুবকর ছিদ্দিক (রাঃ) ক্বওমী মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন শাহাদত বরণকারী সাদপন্থি মিজানুর রহমান সুমনের পিতা ছবির উদ্দিন প্রামাণিক, তাবলিগের বিশ্ব মার্কাজ মসজিদ নিজামুদ্দিনের অনুসারী ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের তাবলিগের জিম্মাদার সাথীসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা। এতে বয়ান দোয়া ও পেশ করেন আবুবকর ছিদ্দিক (রাঃ) ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা শাহানুর রহমান সরকার। তিনি এ সময় বলেন, আমাদের তাবলিগ সাথী ভাই মিজানুর রহমান সুমন ভাই দ্বীনের কাজে টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমার মাঠে গিয়ে হামলার শিকার মারা যান। আল্লাহপাক সুমন ভাইকে শহিদী মর্যাদা দান করুন। সাদপন্থি মিজানুর রহমান সুমনের পিতা ছবির উদ্দিন প্রামাণিক দোয়া পূর্ব আলোচনায় বলেন, আমি গতবছর ভারতের কলকাতা শহর পাড় হয়ে একটি জায়গায় সাদপন্থিদের এস্তেমায় অংশগ্রহণ করেছি। ওখানে বাংলাদেশের এস্তেমার মতো লাখো মানুষের উপস্থিত দেখেছি। জানা গেছে, সাদপন্থি মিজানুর রহমান সুমন গতবছরের ১৭ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমা মাঠে জোড় এস্তেমায় শরীক হয়ে জোবায়ের ও সাদপন্থিদের সৃষ্ট সংঘর্ষে হামলার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে প্রায় দেড়মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। তার একজন ছোটভাই থাকলেও বিগত কয়েক বছর আগে সে সড়কে গাড়ি চাপায় মারা যায়। বর্তমান নিহত মিজানুর রহমান সুমনের পরিবারে তার একমাত্র বিবাহিত বোন, বাবা, মা ও সুমনের ২ মেয়ে ১ ছেলে তার স্ত্রী রয়েছে। মিজানুর রহমান সুমন ছোট থেকেই দিল্লীর নেজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারী হয়ে তাবলিগ জামাতের কাজ শুরু করেন। ৩ চিল্লা, ১ চিল্লা, মাসে ৩ দিন করে দ্বীনের দাওয়াতের সফরে যেতেন। সর্বশেষ মুরব্বীদের তাকাজা পূরণের জন্য তার কাছে টাকার জোগান না থাকার পরও ১৭ ডিসেম্বর ছুটে যায় টঙ্গীর ময়দানে। এতে জুবায়ের-সাদপন্থিদের সৃষ্ট সংঘর্ষে জুবায়ের পন্থিদের হামলায় গুরুতর আহত হন মিজানুর রহমান সুমন। প্রায় দেড়মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধনি থাকার পর ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোররাত ৩ টায় মারা যান তিনি। তার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমা মাঠে। এতে অংশগ্রহণ করে সাদ পন্থি তাবলিগের আলেম ওলামারা। পরে বুধবার ঢাকা থেকে তার মরদেহ বাড়িতে এনে দ্বিতীয় দফায় ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাযা নামাজে ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অংশগ্রহণ করে হাজার হাজার তাবলিগ সাথী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান। জানাযা পরিচালনা করেন ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আলহাজ্ব হাফেজ ইব্রাহী খলিল। এতে বক্তব্য রাখেন মরহুম তাবলিগ সাথী মিজানুর রহমান সুমনের সম্পর্কের বড়ভাই খোরশেদ আলম সাউদ বলেন, আমার ছোটভাই সুমনকে টঙ্গীর মাঠে খুন করা হয়েছে। ছোটভাই সুমন ছোট থেকে নামাজ পড়ে। সে তাবলিগ ভালোবেসে টঙ্গীর মাঠে গেছে। তিনি দুঃখ করে বলেন, পুলিশ মারলে পায়ে মারে। আর হুজুররা আমার ছোটভাই সুমনকে মাথায় আঘাত করে মেরেছে। তার মাথায় যে ভাবে আঘাত করেছে মারাত্বক। হুজুররা আমাদেরকে ইসলাম শিক্ষা দিবে। অথচ আমরা কি দেখলাম? এটা আমরা এটা চাইনা।