নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বড় রাজাপুর গ্রামের মিয়া বাড়িতে এই হামলা চালায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বাড়ির ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল, যেমন ‘কাউয়া কাউয়া’ এবং ‘নারায়ে তাকবির’। তারা বাড়ির আসবাবপত্র, ছাদের রেলিং এবং সামনে থাকা একটি পরিত্যক্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া বাড়ির সামনে থাকা পানির ট্যাংকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার দোতলা ঘর, টিনশেড ঘর এবং রান্নাঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ এবং ওবায়দুল কাদেরের দুঃশাসনের ফলেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে আন্দোলনকারীরা তাদের ফেসবুক পেজ থেকে এই হামলার ঘোষণা দেয়। পোস্টে লেখা হয়, ‘নোয়াখালীর বিপ্লবীরা, বুলডোজার নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। মার্চ টু কাউয়া কাদেরের বাড়ি। আজ বেলা ১১টা।’
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, “বাড়িতে ওবায়দুল কাদেরের নিজস্ব কোনো ঘর নেই। এটি তার ছোট ভাই কাদের মির্জার বাড়ি।” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার ঘোষণা দেওয়ার পর সকাল থেকেই সাংবাদিক এবং স্থানীয় জনতা বাড়িটির সামনে ভিড় জমায়।
বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতারা বলেন, “সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দায়ী। আজকের এই হামলা সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।” তারা আরও বলেন, “যারা খারাপ রাজনীতি করবে, তাদের এমন পরিণতি হবেই।”
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুপুর ১টা ৫০ মিনিটেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা চলমান ছিল। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।