টাঙ্গাইলে ডেইলী নিউজ মেইলের জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক সুমন ঘোষের উপর হামলা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুকুমার ঘোষ ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাংবাদিক সুমন ঘোষ বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কালিহাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর আগে, ৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা- কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুকুমার ঘোষ, জগদীশ ঘোষের ছেলে বিদ্যুৎ ঘোষ, নৃপেন ঘোষ ও তার ছেলে প্রথম ঘোষ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। অভিযোগ ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী এলাকায় গরীব দু:খীদের আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে স্থানীয় যুুবকরা মিলে পৌলী ঘোষপাড়া যুব সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সদস্যরা গত দুর্গাপূজার উদ্যোগ নেন এবং প্রতিমা কাঠামো নির্মাণ শুরু করেন। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুকুমার ঘোষ ও কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ পৌলী ঘোষপাড়া যুবসংঘের উদ্যোগে দূর্গাপূজা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং পূজা করলে সংগঠনের সদস্যসের মারধরসহ পুকুরে ডুবিয়ে মারার হুমকি দেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকার মুসলিম সমাজ থেকে জানার পর তারা এর তীব্র নিন্দা জানান। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব পালিত হয় পৌলী গ্রামে। এর পর থেকে সুকুমার ঘোষ ও প্রদীপ ঘোষসহ তাদের পরিবার পৌলী ঘোষপাড়া যুব সংঘ’র বিরোধিতা, সদস্যদের এবং তাদের পরিবারের সবাইকে প্রতিনিয়ত গালিগালাচ ও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সংগঠনের সদস্যরা কোন কর্ণপাত না অত্যন্ত নিরব থেকে তাদের সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রতি বছরের ন্যয় সরস্বতী পূজা উদাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন প্রায় এমন অবস্থায় পুজোর আগের দিন সুকুমার ঘোষের ভাতিজা বিদ্যুৎ ঘোষ, ছেলে প্রথম ঘোষ, ভাতিজা তন্ময় ঘোষ ও তন্ময়ের বাবা নৃপেন ঘোষ পৌলী ঘোষপাড়া যুব সংঘে তালা দেওয়ার ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিয়ে সংঘ’র সদস্যরা সুকুমার ঘোষকে অবহিত করতে গেলে তিনি বলেন, এলাকায় কোন সংগঠন কার্যক্রম চলবে না, ওই ঘর ভেঙ্গে ফেলা হবে। অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে “ আবার বিচার দিবার আইছস”মারতে উদ্ধত হলে তারা চলে আসেন। পরদিন সকালে ছোট পরিসরে ভয়ে ভয়ে পুজোর কার্যক্রম সম্পন্ন করে সদস্যরা। পূজার খরচের হিসাব করতে রাত্রি আনুমানিক ৮টার দিকে সদস্যরা সংঘঠন ঘরের কাছাকাছি গিয়ে দেখতে পান সুকুমার ঘোষের ভাতিজা বিদ্যুৎ ঘোষ, ছেলে প্রথম ঘোষ, ভাতিজা তন্ময় ঘোষ পৌলী যুব সংঘ অফিস তালা দিয়ে গালিগালাচ করছে এবং উচ্চস্বরে হুমকি দিচ্ছে “কার বাবার কত বড় ক্ষমতা দেখি এই খুলে”। এসময় সংঘের সদস্যরা ক্লাবের সামনে গেলে বাক বিতন্ডা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই উত্তেজনার শব্দ শুনে পৌলী ঘোষপাড়া মোড়ে চা স্টল থেকে উঠে মন্দির সংলগ্ন সংঘঠনের সামনে গিয়ে উভয় পক্ষকে জানায় “কি হয়েছে? রাগারাগি না করে বসে কথা বল”উভয়কে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ওই সময় অভিযুক্তরা সাংবাদিক সুমন ঘোষকে এলোপাথারি মারপিট করে। পরে তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। সুকুমার ঘোষ জানান, আমি তাদের শাসন করার অধিকার রাখি, তাই শাসন করেছি। সাংবাদিক সুমন ঘোষ বলেন, সুকুমার ঘোষ ও পরিবারের লোকজনের ভয়ে খুব ভীত সংন্ত্রস্ত জীবন যাপন করছি। অভিযুক্তরা যে কোন সময় তার ও পরিবারের ক্ষতিসাধন করতে পারে। এ বিষয়ে কালিহাতী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।