নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর এলাকায় নকশাবিহীন বাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে। এতে বঞ্চিত হচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ বছরে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের তৎপরতা না থাকায় এমন সুযোগ নিচ্ছে সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিরা। প্রায় ছয় মাসে নকশাবিহীন বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে শতাধিক। এর আগেও যা ছিল অব্যাহত। বর্তমানে অনুমোদনহীন বাড়ি তৈরির কাজ বেশ পাল্লা দিয়ে চলছে। নিযুক্তীয় প্রকৌশলী সরজমিন দেখে অবকাঠামো নির্মাণের অনুমোদন দেয়। আর এজন্য সরকার নির্ধারিত একটি ফি পৌরসভার রাজস্ব খাতে জমা দিতে হয়। টাকার অঙ্কে তা ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের একটি সূত্র জানায়। স্থানীয় বাসিন্দা সাজিদ, আরিফ, জলির অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙ্গালীপুর নীজপাড়ায় অনুমোদনহীন বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি নকশা অনুমোদনের জন্য কোনো আবেদনই করেনি। নকশা আবেদনের তালিকাতেও ওই ব্যক্তির নাম নেই। একাধিক স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পৌর এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডে প্রতিদিনই নকশাবিহীন বাসাবাড়ি তৈরি হচ্ছে। তাদের মতে, পৌরসভার প্রকৌশল দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা তৎপর হলে নকশাহীন অবকাঠামো নির্মাণ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যেত। বৃদ্ধি পেত পৌরসভার রাজস্ব। গড়ে উঠত পরিকল্পিত শহর। বিরাজ করত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ। এ নিয়ে কথা হয় ইসমত আরার সঙ্গে। তিনি বলেন, শহর এলাকায় পরিকল্পনা মাফিক ভবন, সড়ক, বাজার, ড্রেন, পার্ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রার্থনাগার ও শিশুদের খেলার মাঠ গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে শহরের নাগরিকরা নির্মল পরিবেশে বসবাস করতে পারে। শিশুরা বেড়ে উঠবে মুক্ত বায়ু সেবন করে। তার মতে, শহর এলাকায় গ্রামের মতো খোলামেলা জায়গা থাকে না। অল্প জায়গায় অধিক মানুষের বসবাস। সেজন্য মানুষ বসবাস উপযোগী শহর করতে হলে নকশামাফিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করতে হবে। নকশাবিহীন কোনো বাসাবাড়ি বা রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হলে তা হিতে বিপরীত হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। নকশাবিহীন ভবন নির্মাণ বিষয়ে জানতে কথা হয় সৈয়দপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, নকশা পাস ছাড়া কেউ যাতে পৌর এলাকায় কোনো অবকাঠামো নির্মাণ না করে সেজন্য মাইকে বহুবার প্রচার করা হয়েছে। একই বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌর প্রশাসক নুর-ই - আলম সিদ্দিকী বলেন, কোনো নাগরিক পৌরসভার পাসকৃত নকশা ছাড়া ভবন যাতে নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য ১০ সদস্যের মনিটরিং টিম করা হয়েছে। ওই টিম এ বিষয়টি দেখাশোনা করছেন। পৌরবিধি মতে, পৌর এলাকায় যে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার প্রকৌশল শাখা থেকে নকশা অনুমোদন করতে হয়।