সরাইলে মাদক বিরোধী সমাবেশ

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
সরাইলে মাদক বিরোধী সমাবেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ইউএনও ওসি ও স্থানীয়দের উদ্যোগে মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার কালিকচ্ছ শহীদ মিনার চত্বরের ওই সমাবেশে মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত তৃতীয় লিঙ্গসহ (হিজড়া) সকলকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রশাসন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ছুলামদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ সকল প্রকারের মাদক ব্যবসা ও সেবন না ছাড়লে উচ্ছেদসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে কালিকচ্ছ এলাকায় সওজ’র জায়গায় বসবাস করছে তৃতীয় লিঙ্গের বেশ কয়েকজন সদস্য। তারা সড়কে বাড়িতে মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের পাশাপাশি সম্প্রতি অনেকটা প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একই গ্রামের ঋষি বাড়িতে বিগত কয়েক যুগ ধরে চলছে ছুলামদ উৎপাদন সেবন ও বিক্রি। এখানকার মদের ব্যবসার সাথে স্থানীয় অনেক প্রভাবশালী নেতা ও সমাজপতিরা জড়িতে থাকার কথা বারবার আলোচনায় আসছে। উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় শতবার আলোচনা হয়েছে। ওই গ্রামের কতিপয় শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ প্রতিবাদ করায় তাদের বিরূদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করার ঘটনাও ঘটেছে। এসব কারণে হুমকির মধ্যে পড়েছে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের ভবিষ্যৎ জীবন। অভিভাবকরা হয়ে পড়েছেন উদ্বীগ্ন। এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে পারিবারিক অশান্তি চুরি ছিনতাই ও ডাকাতি। দীর্ঘদিন পর ওই মাদকের বিরূদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন সেখানকার সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাধারণ লোকজন। এরই প্রেক্ষিতে কালিকচ্ছ শহিদ মিনার চত্বরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইনের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সহস্রাধিক লোকের অংশ গ্রহণে মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বক্তব্য রাখেন- সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল হাসান, জেলা বিএনপি’র সদস্য মো. আহসান উদ্দিন খান শিপন, সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হামিদ প্রমূখ। এ ছাড়াও সভায় স্থানীয় আলেম ওলামা ও মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, সোহেলের নেতৃত্বে গড়ে উঠা তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) একটি গ্রƒপ চাঁদাবাজির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় বেপরোয়া। তারা কারো কথা শুনতে নারাজ। চামার বাড়ির ছোলামদ দিনে রাতে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এই ছোলামদ দ্রƒত উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে শুধু কালিকচ্ছ নয় সমগ্র উপজেলায় মাদকের সয়লাবে তারা ভূমিকা রেখে চলেছে। এই মূহুর্তে তাদেরকে প্রতিহত বা প্রতিরোধ না করলে এই সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। গ্রামবাসী তাদের বিরূদ্ধে রাস্তায় নেমে যাবে। ওসি বলেছেন, মাদকের সাথে কোন ধরণের আপোষ নেই। সোজা পথে না আসলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিব। হয়ত মাদক ব্যবসা ছাড়বেন, নয়ত এলাকা ছাড়বেন। নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন মাদক ব্যবসায়ি হিজড়াদের বলেন, ব্যবসা না ছাড়লে আইনি ব্যবস্থা ও  সওজের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করব। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলে সাধ্যমত সরকারি সহায়তা করব। ছুলামদ উৎপাদন ও দেদারছে বিক্রি বন্ধ না করলে অভিযানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সবশেষে প্রকাশ্য সভায় ক্ষমা চেয়ে মাদক ব্যবসা না করার ঘোষণা দিয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি শিবানী বিজলী ও ঋষি বাড়ির প্রতিনিধি বুধাই রবিদাসের ছেলে হীরা রবিদাস।  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে