আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের বাইরে অন্য কোনো নির্বাচনের জন্য এ মুহূর্তে কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না। তবে সরকার চাইলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বও পালন করবে ইসি।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং ১৮টি উন্নয়ন সহযোগী দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, “আমরা ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রস্তুতি আমাদের নেই। তবে সরকার যদি স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটি বিবেচনা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা ১৬ ডিসেম্বরের এক বক্তব্যে বলেছিলেন, “যদি অল্প পরিমাণে সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হয় এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য সেখানে গিয়ে দাঁড়ায়, তবে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ হতে পারে। তবে যদি আরও কিছু সংস্কারের সুযোগ দেওয়া হয়, তবে নির্বাচন ২০২৬ সালের জুন নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে।” ইসি এই পরিস্থিতিতে তাড়াতাড়ি সম্ভাব্য সময় ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বৈঠকে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, “একটি প্রশ্ন উঠেছিল যে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন একসাথে করা সম্ভব কি না। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে এক বছর সময় লাগে, যা জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে পারে। তাই জাতীয় নির্বাচনই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমরা দেখব সেটি জাতীয় নির্বাচনের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে কি না। তবে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা নেই।”
বৈঠকে ইউএনডিপি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ১৮টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার জানান, “ইসি আমাদের কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত সহায়তা চেয়েছে। আমাদের একটি দল জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফর করেছে এবং কী ধরনের কারিগরি সহায়তা দেওয়া যেতে পারে তা নির্ধারণ করেছে।”
লিলার আরও বলেন, “আমরা ইসিকে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করছি। আমরা আশা করি, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি সেরা নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সূচি নির্ধারণের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকার এবং ইসির।”