প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বৈঠক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জেকবসনের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।  

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইড স্থগিতের ফলে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বির জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রমের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "আইসিডিডিআর,বি ডায়রিয়া ও কলেরায় মৃত্যুহার প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছেÑবাংলাদেশসহ হাইতির মতো দেশেও। ইউএসএইডের ভবিষ্যৎ যা-ই হোক, বাংলাদেশের সংস্কার ও পুনর্গঠনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অপরিহার্য। এটি বন্ধ করার সময় নয়।"  

এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলোর কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, একটি সম্মত কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, "একবার সংস্কার নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছালে রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে এবং এগুলো বাস্তবায়ন করবে।"  

চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জেকবসন নতুন সরকারের জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দেন। তিনি সম্প্রতি নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ‘অপারেশন ডেভিলস হান্ট’ সম্পর্কেও জানতে চান।  

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বাংলাদেশে সমঝোতার ডাক দিয়েছেন এবং জনগণকে প্রতিশোধের চক্র থেকে বেরিয়ে এসে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে বলেছেন। তিনি বলেন, "আমরা সবাই এই দেশের সন্তান। প্রতিশোধের কোনো স্থান থাকা উচিত নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেকোনো পরিস্থিতিতে মানবাধিকার রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"  

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।"  

বৈঠকে অভিবাসন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।