ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমাটি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, দর্শকদের ভালোবাসা আর চাহিদার কাছে কোনো বাধাই দীর্ঘস্থায়ী নয়। মুক্তির প্রথম দিন থেকেই হাউসফুল শো, টিকিট না পেয়ে হল থেকে ফিরতে হওয়া দর্শক, আর সামাজিক মাধ্যমে সিনেমা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা- সব মিলিয়ে বাংলা সিনেমায় যেন নতুন এক জোয়ার এনেছে ‘জংলি’।
প্রথম সপ্তাহে স্টার সিনেপ্লেক্স-এ মাত্র ১১টি শো দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, দর্শকের প্রবল চাহিদা দেখে দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বিগুণ করা হয় শো সংখ্যা। তৃতীয় সপ্তাহে এসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনগুণে। এখন প্রতিদিন স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখা মিলিয়ে ‘জংলি’ দেখানো হচ্ছে ২১টি শো-তে। একই সঙ্গে যমুনা ব্লকবাস্টারে ৪টি এবং লায়ন সিনেমাসে ৩টি শো চালু রয়েছে— সব মিলিয়ে মাল্টিপ্লেক্সে ২৮টি শো প্রতিদিন।
মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি সিঙ্গেল স্ক্রিনেও সিনেমাটি জমিয়ে চলেছে। মুক্তির সময় মাত্র তিনটি হলে চললেও, এখন ‘জংলি’ প্রদর্শিত হচ্ছে ২১টি সিঙ্গেল স্ক্রিনে— যা শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’র পর সর্বোচ্চ। টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি জানান, “আমার বিশ্বাস, ‘জংলি’ লম্বা রেসের ঘোড়া। ‘পরাণ’ পরিবেশনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি— এই সিনেমাটিও ইতিহাস গড়তে পারে।”
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ। একাধিক ভিন্ন লুকে তিনি পর্দায় হাজির হয়েছেন। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও শবনম বুবলী। দর্শকদের ভাষ্যমতে, সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি গল্প, আবেগ ও সংগীতের মেলবন্ধন একে করেছে পারিবারিক বিনোদনের অনন্য উদাহরণ।
নির্মাতা এম রাহিম বলেন, “‘জংলি’ এখন শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি হয়ে উঠেছে প্রতিটি পরিবারের গল্প। পরিবার-পরিজন একসঙ্গে হাসছে, কাঁদছে— এটাই আমাদের পরম সার্থকতা।”
১৬ দিনের প্রদর্শনী শেষে সিনেমাটি আয় করেছে প্রায় ২ কোটি ৬ লাখ টাকা। এছাড়া, দেশে দারুণ সাড়া ফেলার পর, ‘জংলি’ এবার মুক্তি পাচ্ছে বিদেশেও, ২৫ এপ্রিল থেকে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়া জানিয়েছে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝেও সিনেমাটি নিয়ে বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
ঈদের অন্য আলোচিত সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘বরবাদ’ এখনও সবচেয়ে বেশি শো নিয়ে চলছে (মাল্টিপ্লেক্সে ৩৫টি ও সিঙ্গেল স্ক্রিনে শতাধিক)। তবে ‘দাগি’ মাল্টিপ্লেক্সে কিছুটা জমলেও সিঙ্গেল স্ক্রিনে ব্যর্থ হয়েছে— মাত্র চারটি হলে প্রদর্শিত হচ্ছে সিনেমাটি। সেই তুলনায় ‘জংলি’র সাফল্য অধিক স্থায়ী ও বিস্তৃত মনে করছেন বিশ্লেষকরা।