রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে আবারও মুখোমুখি হয়েছে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও লাঠিসোঁটার মহড়া ছিল পুরো ঘটনাজুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল থেকেই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। বেলা পৌনে ১২টার দিকে তাঁরা সিটি কলেজের দিক এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, তবে তা সহজ ছিল না।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী সুজন আলী জানান, “গতকাল আমাদের এক সহপাঠীকে মারধর করেছে সিটি কলেজের কিছু ছাত্র। আজ তারই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম আমরা।”
অন্যদিকে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা আমাদের কলেজের ছাত্র নয়। বরং ঢাকা কলেজের ছাত্ররাই হঠাৎ করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
ঘটনার সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয় সায়েন্স ল্যাব এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিকবার সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক বলেন, “বেলা ১১টার পর থেকেই উত্তেজনা বাড়ছিল। তবে এখনও সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।”
নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুল ইসলাম জানান, “দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”
এই ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগেই (১৫ এপ্রিল) একই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়েছিল। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুই পক্ষের মধ্যে এই ধরনের উত্তেজনা দেখা যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তা প্রতিরোধে কার্যকর কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি।
ঘটনার সময় শিক্ষার্থীদের একটি দল সিটি কলেজের নামফলক থেকে “ঢাকা” অংশটি ভেঙে ফেলে রাস্তায় নিয়ে আসে, যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায়। শিক্ষার্থীদের এই উগ্র আচরণ এবং বারবার সংঘর্ষের ঘটনা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঘটনার ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যা আলোচনার জন্ম দেয়।