বরগুনার তালতলীতে সংবাদ সংগ্রহকালে দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সাংবাদিকসহ তিন সাংবাদিকের উপর স্থানীয় ভূমি দস্যু কর্তক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তালতলী থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা হয়েছে। এদিকে সন্ত্রাসীরা এ মামলা থেকে রক্ষা পেতে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী শহিদুল বাদী হয়ে সাংবাদিকসহ ১২ জনকে আসামী করে ৩২৬ ধারায় হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা করে। তবে মেডিকেল রিপোর্টে এমন কোন হামলার
প্রমান পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি থানায় এজাহার নেয়ার আদেশ দিলে তালতলী থানার ওসি শাহজালাল মামলাটি এজাহার ভুক্ত করেন।
জানা গেছে গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার ১১ টার দিকে উপজেলার শারিকখালি ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামের মৃতু আবুল হাসেম মুন্সীর বংশধরদের প্রায় ষোল একর জমি দখল করে প্রতিবেশী আব্দুসসাত্তার গং জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ কালে জসীম মুন্সী ও কালাম মুন্সী পুলিশ ও সাংবাদিকদের সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশের সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়া দিগন্ত সাংবাদিক ইউসুফ আলী সহ ৩ সাংবাদিক সন্ত্রাসীদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার ভিডিও ধারণ করে।
স্থানীয় ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাংবাদিকদের উপরে হামলা চালায়। এ সময় সাংবাদিক ইউসুফ আলীকে পুলিশের সামনে রড ও লাঠি সোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাদের ক্যামেরা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পুলিশ মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় সাংবাদিক ইউসুফ আলী তালতলী থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি রোববার একটি মামলা করেন। মামলা নং ০৩/২৫। এ মামলা থেকে রক্ষা পেতে আব্দুসসাত্তারের মেয়ে তাসলিমা ও পুত্রবধু রেমিজাকে ভিকটিম বানিয়ে অবশকারক ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্লেড দিয়ে মাথা কেটে কৃত্রিম ইনজুরি করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করে। সাংবাদিক হামলাকারী রফিক সিকদার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটনার পরপরই পুর্ব ঝাড়াখালী গ্রামের তাদের আত্মীয় জনৈক আনোয়ারের বাড়িতে বসে ব্লেড দিয়ে মাথা চিড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। ২ নং ভিকটিম রেমিজার মাথায় সাংবাদিক ইউছুফ ধারাল ছ্যানা দিয়ে কুপিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ মামলায় উল্যেখ করেন। আমতলী হাসপাতাল থেকে ১ দিন চিকিৎসার পর ভিকটিমদ্বয়কে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়।
এদিকে সাংবাদিকের উপর হামলার সময় একই তারিখ একই সময় অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারী শুক্রবার ১১ টায় ঘটনা দেখিয়ে হামলাকারী শহীদুল্লাহ বাদী হয়ে ২ ভিকটিমকে কুপিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ দিয়ে নয়া দিগন্ত সাংবাদিক ইউসুফ সহ প্রতিপক্ষের ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা দ্রুত বিচার আদালতে মামলা করেন। তারিখ ০৪/০২/২০২৫ ধারা ৩২৩/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৫০৬(দ) দঃ বিঃ। তবে মেডিকেল রিপোর্টে ধারাল অস্্র দিয়ে মাথায় আঘাত করার কোন প্রমান মিলেনি। মামলাটি তালতলী থানায় এজাহার ভুক্ত করে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। মামলাটি এসআই এ বি এম সিদ্দিকুররহমানের কাছে তদন্তভার দেয়া হয়। সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকের দেয়া মামলা থেকে রক্ষা পেতে ঐ মিথ্যা মামলায় চার্জশীট প্রদানের চেষ্টা করে।
সরে জমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, আঃ ছত্তার গং স্থানীয় ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে জমি দখলকালে প্রতিপক্ষকে তাদের ঘরের মধ্যে জিম্মি করে রাখে তাদের গাছের ফলমূল লুট সহ আগুন জালিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে।
সাংবাদিক ইউসুফ আলী বলেন, পুলিশের সামনে আমার ওপর হামলা করে শারিকখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সহ সভাপতি কালাম গাজীর ও আমির ওরফে আরিফ শিকদারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। এই হামলার বিচার চেয়ে আমি মামলা করি। এ মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমাকে হয়রানি করার জন্য এই মিথ্যা মামলা করেন সন্ত্রাসীরা।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজালাল বলেন,আদালতের নির্দেশে মামলাটি এজারভুক্ত হয়েছে। সেখানে যে সাংবাদিকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তিনি যদি ঐ ঘটনার সাথে জড়িত না থাকে তাহলে তাকে অব্যহতি দেওয়া হবে। তিনি যাতে হয়রানি না হয় সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।