রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে এ আবেদন শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই আতিকুর রহমান খান। তুরিন আফরোজ বর্তমানে আদালতের হাজতখানায় রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন বিএনএস সেন্টারের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ শেষ দিনে আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গুরুতর আহত এই শিক্ষার্থী গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং ১০০–১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে মামলায় ৩০ নম্বর আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। গোলাম আযমসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন। ২০১৭ সালে সাবেক এনএসআই মহাপরিচালক ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় তাকে আবারও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে এর কিছুদিন পর ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের এক আসামির (ওয়াহিদুল হক) সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগে তাকে প্রসিকিউটর পদ থেকে অপসারণ করে সরকার।
তিনি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। একই বছর ক্ষমতার পালাবদলের পরে ২০ আগস্ট ‘গণহত্যা’ নিয়ে দায়ের করা একটি আবেদনে তুরিন আফরোজসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের অনুরোধ জানানো হয়।
পাল্টা সহিংসতার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট নীলফামারীর জলঢাকায় তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।