আসন্ন পহেলা বৈশাখের উৎসবকে ঘিরে দেশে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, "নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে। রমজান মাসের মতোই উৎসবকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর ও কার্যকর থাকবে।"
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, রমনা বটমূল, হাতিরঝিল, রবীন্দ্র সরোবরসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে উৎসবকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। বাড়তি নজরদারিতে থাকবে জনসমাগমপূর্ণ এলাকা ও সাংস্কৃতিক মঞ্চগুলো।
বিভিন্ন স্থানে বিদেশি কোম্পানির দোকান ভাঙচুরের প্রসঙ্গ টেনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, "এবারের বৈশাখী আয়োজনে শুধু বাঙালিরাই নয়, ২৬টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন। ফলে জনসমাগম আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।"
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু মূল আয়োজক, তারা ১০ এপ্রিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাত্রা নির্ভর করবে ঝুঁকির উপর। যদি মনে হয় ঝুঁকি কম, তাহলে ব্যবস্থা হবে লিবারেল। আবার ঝুঁকি বাড়লে আরও কড়া নিরাপত্তা জারি করা হবে।" ঢাকায় পুলিশ ডিএসপির তত্ত্বাবধানে এবং অন্যান্য জেলায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারদের নেতৃত্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “পুলিশ যদি মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়, তাতে অসুবিধা কী? তারাও তো এই দেশের মানুষ। তবে তারা তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবেই পালন করবে—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”