পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্ক নতুনভাবে চিত্রিত হলো। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের ওপর জোর দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কিছু বাধা আমাদের অগ্রযাত্রাকে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছে। এখন সময় এসেছে, এসব অতিক্রম করে পারস্পরিক স্বার্থে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করার।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সবসময়ই আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতায় বিশ্বাস করে। বিশেষ করে সার্ক কাঠামোর ভেতরে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করায় আমরা বরাবরই আগ্রহী।”

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ বলেন, “আমরা অতীতে অনেক সুযোগ হারিয়েছি। এখন আমাদের উচিত পারস্পরিক সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো।” তিনি দুই দেশের মধ্যে বিশাল আন্তঃআঞ্চলিক বাজারের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার করতে হবে, কারণ আমরা প্রতিবারই ‘বাস মিস’ করতে পারি না।”

বেসরকারি খাতে নিয়মিত বিটুবি (ব্যবসা-ব্যবসা) সংযোগ এবং সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন বালুচ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এপ্রিলের শেষের দিকে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন ঢাকা সফর দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

এছাড়াও জানানো হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের প্রধান ব্যবসায়ী সংগঠন এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে এবং এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে, যা বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এবং ডিসেম্বরে কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের সময় তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছিল।

তিনি বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের সম্পর্ক স্থবির ছিল। আমরা একে অপরকে মিস করেছি। এখন সময় এসেছে সেই বরফ গলানোর এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের।”

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকালে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।