পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন তুরস্কে চলমান আন্তালিয়া কূটনৈতিক ফোরামে অংশগ্রণের ফাঁকে তুর্কি টেলিভিশন টিআরটি ওয়ার্ল্ডে রোববার দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন,
“জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার একটি টেকসই ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকারের মূল লক্ষ্য এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করা, যেখানে কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা যেন আর ফিরে না আসে। বর্তমান সরকার মানুষের দাবি মেটাতে এসেছে। জীবন দেওয়া ও আন্দোলনকারীদের চাওয়া এমন একটি টেকসই ব্যবস্থা, যেখানে আর কেউ ক্ষমতা অপব্যবহার করতে না পারে।”
তৌহিদ হোসেন আরও যোগ করে বলেন,
“নতুন সংবিধান আসছে, আমরা কখনই সরাসরি এমন কথা বলিনি। এ বিষয়ে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সিদ্ধান্তটি আসবে। আমরা চাই, বিগত সরকার যে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে পেরেছিল, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল- সেসব যেন আর ফিরে না আসে। বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনীতি। আগের ১৫ বছরে দেশ একপ্রকার লুটপাটের শাসনে পরিণত হয়েছিল। ৪২ থেকে ২০ বিলিয়নে নেমে এসেছিল বৈদেশিক রিজার্ভ। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। আমরা এখন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি- বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে।”
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটা আমাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অংশ। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের দৃষ্টিভঙ্গি পারস্পরিক স্বার্থ এবং সম্মানের ভিত্তিতে একটি ভারসাম্যপূর্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমার ধারণা, ভারতও সেই সম্পর্ক চায়। নতুন বাস্তবতায় মানিয়ে নিতে হয়তো তাদের একটু সময় লাগছে।
তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একেবারেই স্বতন্ত্র উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে তুরস্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। আমরা চাই, তুরস্কের সঙ্গে এক শক্তিশালী, দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠুক। আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।