পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভবদহের জলাবদ্ধতা একটি স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সরকার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করছে। তবে সবার প্রচেষ্টায় এ বছর ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ভবদহ স্লুইসগেট পরিদর্শন শেষে ভবদহ মহাবিদ্যালয় কলেজ প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ও সুধী সমাজের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষতিগ্রস্থ ২০হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ১৭ হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়েছে। অতীতে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা সঠিক সদিচ্ছা দেখাননি। বর্তমান সরকার জনগণ ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। আমডাঙ্গা খাল, হরিভদ্রা ও আপার ভদ্রা খননের কাজ সেনাবাহিনী করবে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই সজাগ আছি, যাতে এই অঞ্চলের মানুষকে আর দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। কৃষকদের বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এই এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণ আদায় বন্ধ করা হয়েছে। এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ। এখানে কিছু স্থানীয় সমস্যাও রয়েছে। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হরি নদীর চারপাশে গড়ে ওঠা ইট ভাটাগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, এই ইট ভাটাগুলো সরকারের নয়। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তার জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ভবদহের স্থায়ী সমাধানের কাজ শুরু হবে।
এ মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক, যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, যশোর পুলিশ সুপার রওনক জাহান, মণিরামপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না, মণিরামপুর থানার ওসি নুর মোহাম্মাদ গাজী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মফিজুর রহমান মফিজ, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মাদ মুছা, জেলা জামায়াত ইসলামীর সূরা সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, মণিরামপুর উপজেলা সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ফজলুর রহমান, ঢাকাস্থ মণিরামপুর সমিতির সভাপতি ইকবাল কবীর মোল্যা, সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট শিল্পপতি শফিকুল বারী শফি, নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী খলিলুর রহমান, ভবদহ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ, মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টুসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবন্দ। মতবিনিময় শেষে উপদেষ্টারা কৃষি জমি পরিদর্শন ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।