ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগে কুয়েট সংকটের অবসান, ক্লাস শুরু ৪ মে

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগে কুয়েট সংকটের অবসান, ক্লাস শুরু ৪ মে

দুই মাসের টানা আন্দোলন, উত্তাল রাজপথ এবং ৫৮ ঘণ্টার কঠোর আমরণ অনশন—সবশেষে জয় হলো কুয়েটের শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ এবং ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চলমান সংকটের অবসান ঘটেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৪ মে থেকে পুনরায় শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার জেরে শিক্ষার্থীরা রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলন চরমে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৫ ফেব্রুয়ারি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন এবং ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে ২৯ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। আন্দোলনে ঢাবি ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংহতি জানিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

চাপে নতিস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৪ এপ্রিল বুধবার রাতে ঘোষণা দেয়, উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরীফুল আলম পদত্যাগ করেছেন।

পাশাপাশি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করা হয় এবং আবাসিক হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ভিসি ও প্রোভিসিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয় এবং শিগগিরই নতুন নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের ঘোষণা আসে।

তবে শিক্ষক সমাজের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন মনে করেন, “সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই প্রশাসনের পদত্যাগ আদায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পরাজিত হয়েছে।”

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে