পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। মাঠের পর মাঠে সোনালী শীষ দুলছে। নতুন ধানের গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, প্রচণ্ড খরতাপে আরও বেশি খুশি কৃষক। তবে আতংক রয়েছে তাদের মনে। কারণ এবার ফাল্গুন চৈত্র মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা মনে করছেন বৈশাখে কালবৈশাখী ও অতি বৃষ্টি হতে পারে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দেশী জাতীয় ধানকাটা শুরু হলেও হাইব্রীড জাতের ধান পাখতে আরো সপ্তাহ ১০ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় উপদেষ্টা ল্যাফটেন্যান্ট জেরারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরআলম চৌধুরী (অবঃ) সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা সফর করবেন। ওই দিন তিনি বিকাল ৩টা ২০ মিনিট এ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের দেখার হাওরে উপস্তিত হয়েকম্বাইন্ড হারবেষ্টারের মাধ্যমে হাওরর বোর ধান কাটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদিয়ে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করবেন।
চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ১৩৭টি হাওরে দুই লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। যেখান থেকে চাল উৎপাদন হবে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মুস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, প্রতিটি হাওরেই দেশি ও আগাম জাতের উফশী বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব চিকন ধান সাধারণত কম সময়ে কাটা যায়। এই ধানের ফলন হাইব্রিডের চেয়ে কিছু কম হয়ে থাকে। কৃষকরা গবাদিপশুর খড় ও নিজেদের খাবারের জন্য দেশি ও উফশী জাতের ধান চাষ করেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪৫৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। প্রতিদিনই কাটার পরিমাণ বাড়ছে। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে কাটা শুরু হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে বোরো ফসল রক্ষায় পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ড ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সুনামগঞ্জের ৪৩টি বড় হাওরের ৫৯৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করেছে। বাঁধগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি করা হচ্ছে।