চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এসএসসির গণিত বিষয় খারাপ হওয়ায় পরীক্ষা শেষে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসবাবপত্র ভাংচুর ও সড়ক অবরোধ করেছে পরীক্ষার্থীরা। সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর কেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা শেষে রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ভাংচুর ও বলাখাল-রামপুর সড়ক অবরোধের এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়ভাবে জানাগেছে, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১০টার থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় কঠোর নজরদারি থাকায় অভিযোগ এনে পরীক্ষা শেষে উপজেলার রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
এরপর পরীক্ষার্থীরা বলাখাল-রামপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে এবং রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটক ভাংচুর শুরু করে। এসময় কেন্দ্র সচিবসহ শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সরকারি কর্মকর্তারা সারাক্ষণ পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলো এবং এদিন পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত গার্ড দেওয়া হয়। এতে মানসিক চাপে পড়ে পরীক্ষার্থী। যার ফলে তাদের গণিত পরীক্ষা খারাপ হয়।
রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহের হোসেন জানান, পরীক্ষার্থীরা আমার বিদ্যালয়ের বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল ও গ্লাস (আয়না) সহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি এবং পরবর্তীতে লিখিতভাবে অবহিত করবো।
এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হাজীগঞ্জ-৬ এর কেন্দ্র সচিব ও রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির হোসেন সরকার বলেন, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মৈশাইদ, বোরখাল উচ্চ বিদ্যালয় ও আল-বান্না মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে পরীক্ষা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে (সোমবার) নিয়মিত ও অনিয়মিতসহ ২৫৪ জন শিক্ষার্থী গণিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হৈ-হুল্লূড় শুরু করে।
কেন্দ্রে দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি কেন্দ্র সচিবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, যেহেতু পরীক্ষা চলমান এবং পরীক্ষার্থীরা অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাই অভিভাবকদের অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কেন্দ্র সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।