১৩ দিন পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেন ফরিদা পারভীন

এফএনএস বিনোদন : | প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম : | আপডেট: ১৪ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
১৩ দিন পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেন ফরিদা পারভীন

লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন দীর্ঘ ১৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে নিজ বাসায় ফিরেছেন। তবে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ও বিশেষ নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা পেয়েছেন তিনি। শুক্রবার রাতে তার বাসায় ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

গত ১ ফেব্রুয়ারি তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ফরিদা পারভীন। তার ফুসফুসে পানি জমার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। কয়েক দিন আইসিইউতে থাকার পর অবশেষে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

এ প্রসঙ্গে আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘শুরুতে তার শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল ছিল। একটি পর্যায়ে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত তা আর লাগেনি। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও তাকে চিকিৎসকদের দেওয়া গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে, অন্যথায় নতুন জটিলতা দেখা দিতে পারে।’

ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত দিয়ে সংগীতজীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে তালিম নিয়ে লালনসংগীতের অন্যতম প্রধান শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

সংগীতাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন ফরিদা পারভীন। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে সম্মানিত হন। সংগীত শিক্ষার প্রসারে তিনি ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে শিশুদের লালনসংগীত শেখানো হয়।

ফরিদা পারভীনের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশ-বিদেশের ভক্ত ও সংগীতপ্রেমীরা তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুস্থ হয়ে তিনি বাসায় ফিরলেও এখনো তাকে নিয়মিত চিকিৎসা নিতে হবে। ভক্তরা আশা করছেন, খুব শিগগিরই তিনি আবারও সংগীতজগতে সক্রিয় হয়ে উঠবেন এবং তার দরদভরা কণ্ঠে লালনের বাণী শুনতে পাবেন।

সংগীতপ্রেমীদের কাছে ফরিদা পারভীন শুধু একজন শিল্পী নন, বরং বাউল গানের এক অনন্য দূত। তার দ্রুত সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছে সংগীতপ্রেমী মহল।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW