সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ৩ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ৩ দিনের রিমান্ডে
সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম-ফাইল ছবি

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলামকে মেহেরপুর আদালত ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার ইস্কাটন এলাকা থেকে মোনালিসা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হাসনাত জামানের দায়ের করা সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলার আসামি। পুলিশ তাকে সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করলে, মেহেরপুর সদর থানার পরিদর্শক সেলিম জাহাঙ্গীর ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। তবে আদালত তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। একই সময়ে পলি খাতুনের নামের এক নারীর দায়ের করা মামলায়ও গ্রেপ্তারের আদেশ দেন আদালত।

মোনালিসা ইসলামকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে এবং দু'একদিনের মধ্যে তাকে রিমান্ডের জন্য মেহেরপুর সদর থানায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সেলিম জাহাঙ্গীর।

গত সপ্তাহে মোনালিসার গ্রেপ্তার নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী হিসেবে পরিচিত মোনালিসার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, তিনি বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে অনলাইন ক্যাসিনো কার্যক্রমে এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তিনি মেহেরপুরে সরকারি টেন্ডার, চাকরি নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর পাশাপাশি, ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই সরফরাজ হোসেনও এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তাদের পরিবার টাকার জন্য প্রায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত।

মোনালিসার গ্রেপ্তার মেহেরপুরের সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির সৃষ্টি করেছে। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা বলছিলেন, কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। স্থানীয়দের মতে, তার গ্রেপ্তার কেবল ব্যক্তিগত নয়, একটি বড় রাজনৈতিক সংকটের ইঙ্গিতও দেয়।

এদিকে, মোনালিসার গ্রেপ্তার তদন্তের মুখে পড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। এটি ভবিষ্যতে রিমান্ডের মাধ্যমে আরও বিস্তারিত তদন্তের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। মোনালিসা যদি দলে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার প্রমাণ দেয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এই ঘটনায় ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও আইনগত পরিবর্তন আসতে পারে, যা দেশের রাজনীতি এবং প্রশাসনে গভীর প্রভাব ফেলবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে