মালদ্বীপে বসবাসরত কাগজপত্রহীন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ করার জন্য সে দেশের সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টিও মালদ্বীপ সরকারকে বিবেচনার অনুরোধ জানান।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রশিদের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, শিক্ষাখাত, বাণিজ্য এবং পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
মালদ্বীপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী মূলত পর্যটন ও মৎস্য শিল্পে কাজ করছেন। এছাড়া দেশটিতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এসব কর্মীরা দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তবে অনেক বাংলাদেশি সেখানে কাগজপত্রবিহীন অবস্থায় রয়েছেন, যা তাদের কাজের সুযোগ সীমিত করে এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি করে। এই প্রেক্ষাপটে তাদের বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মালদ্বীপ সরকারকে আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রশিদ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ওষুধসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির হার বেড়েছে। এছাড়া কিছু বাংলাদেশি কোম্পানি মালদ্বীপে ব্যবসা শুরু করেছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করছে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, গত বছর মালদ্বীপে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা ১৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি পর্যটন খাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকেও উজ্জ্বল করছে।
হাইকমিশনার শিউনিন রশিদ জানান, মালদ্বীপের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ করে চিকিৎসা শিক্ষায় পড়াশোনা করছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "মালদ্বীপ থেকে আরও শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।"
প্রধান উপদেষ্টা মালদ্বীপে তার প্রথম কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনকারী হাইকমিশনারকে অভিনন্দন জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, তার সময়কালে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের যৌথ সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়। হাইকমিশনার শিউনিন রশিদ বলেন, মালদ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারে তারা উৎসাহিত।
প্রধান উপদেষ্টার এই আহ্বান এবং আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।