নগরীজুড়ে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। দিনের আলোতেও মশারি টানিয়ে বা কয়েল জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশন থেকে মশার ওষুধ ছিটালেও তাতে নিধন হচ্ছে না মশা। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে উল্টো নগরবাসীকেই এগিয়ে আসার জন্য দাবি করা হয়েছে। নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েই যেন দায় সারতে চাইছে মশা নিধনের মাধ্যমে নগরবাসীকে স্বস্তিতে রাখার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
নিন্মমানের মশার ওষুধ ব্যবহারের নগরবাসীর অভিযোগ মানতে নারাজ বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মশা নিধনে তারা নিয়মিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নিয়ম করে বরিশাল নগরীর চারটি ওয়ার্ডে মশার ম্প্রে ও ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে তা পুরোপুরি কার্যকর। এই ওষুধে কোনো সমস্যা নেই। নগরবাসীর অসচেতনতার কারণে মশার উপদ্রব বাড়ছে জানিয়ে কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীর আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে স্বীকার করলেও মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে মশা নিধন হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, এই ওষুধ প্রয়োগে মশার ৯০ ভাগ লার্ভা নিধন হচ্ছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম শুভ্র বলেন, এটি ঠিক যে নগরীতে মশার উপদ্রব কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই যন্ত্রণা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে আমরা মাঠপর্যায়ে জোর তদারকি শুরু করেছি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিদিন চারটি ওয়ার্ডে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মশার ওষুধ দেওয়ার পর মশার লার্ভা নিধনে লার্ভিসাইড প্রয়োগ করা হয়। এতে মশা মরে ভেসে উঠছে। প্রায় ৯০ ভাগ লার্ভা মারা যাচ্ছে। এছাড়াও ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, বর্তমানে আমরা চারটি ওয়ার্ডে একসাথে মশার ওষুধ প্রয়োগ করতে পারি। আমরা যে ওষুধ দিচ্ছি তা মাঠপর্যায়ে গিয়ে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। ওষুধে কোনো সমস্যা নেই। নগরবাসীর প্রতি আহবান করে তিনি আরও বলেন, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। নগরবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে। তবেই মশার বংশবিস্তার কম হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর বরিশাল জেলায় মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। এরমধ্যে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিবস্থায় ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।