প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই)-এর সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলমের বাসায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তার বাসভবনে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন রোববার (২ মার্চ) সংস্থাটির সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানের বাসায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে তার বাসায় বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ পাওয়া যায়, যা অবৈধ সম্পদের অংশ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত অর্থ জব্দ করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দুদকের একজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তাধীন ছিল। অনুসন্ধানে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইতোমধ্যে সাইফুল আলম, তার স্ত্রী লুবনা আফরোজ এবং তাদের সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে। পাশাপাশি তাদের মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।
গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলমকে। এরপর থেকেই তার সম্পদের বিষয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছিল। দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে তার ব্যাংক লেনদেন পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এবং সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ মেলায় বিএফআইইউ তার ও তার পরিবারের সদস্যদের সকল ব্যাংক লেনদেন স্থগিত করে।
দুদক জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত অর্থের প্রকৃত উৎস খতিয়ে দেখতে আরও তদন্ত চালানো হবে। পাশাপাশি তার অন্যান্য সম্পদের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দুদক শিগগিরই সাইফুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করতে পারে।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও এই ঘটনাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। এখন দেখার বিষয়, তদন্তের পর কতটা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং এর প্রভাব ভবিষ্যতে কীভাবে প্রতিফলিত হয়।