নাগরপুরে সাংবাদিকের বাসায় ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার ১

এফএনএস ( টাঙ্গাইল ) : | প্রকাশ: ২ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৪৫ পিএম
নাগরপুরে সাংবাদিকের বাসায় ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার ১

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে সাংবাদিকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদল নগদ ২ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ বিষয়ে শনিবার নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।নাগরপুর থানার মামলা নং ২।

মামলা সূত্রে জানা যায়,  সাংবাদিক মোঃ সিরাজ আল মাসুদের নিজ বাড়িতে তার মা একা বসবাস করেন। ঘটনার দিন জমি সংক্রান্ত সালিসি কাজে উপজেলার ভাড়রা বাজারে মিটিং শেষে তার মা ও ছোট ভাই আনুমানিক সন্ধ্যা সোয়া ৬ টায় নাগরপুরস্থ বাসায় ফিরে আসেন। বাড়িতে ফিরেই ওৎ পেতে থাকা একদল সশস্ত্র ডাকাতের হামলার শিকার হন। এসময় ছোট ভাই জাহিদ হাসানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চাবি ও মোবাইল ফোন  নেবার চেষ্টা করে। এসময় তিনি বাঁধা দিলে বড় ছোড়ার বাট দিয়ে তার বাম চোখে আঘাত করে। এ সময়  মা ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে ডাকাত দলের সদস্যরা তার মাকে মারধর করে তার গলায় পরিহিত স্বর্নের চেইন খুলে নেয়। মায়ের চিৎকারে লোকসমাগমের ভয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে আহত জাহিদ হাসান বলেন,  আমার মা যখন বাসায় গেইট খুলে প্রবেশ করে তখন আমার বাসার সামনে বাইক থামাই। গেইট খোলা রেখে  বাসায় প্রবেশ করি। ঠিক তখনই আগে থেকে ওতপেতে থাকা ডাকাত দল পেছন থেকে  আমার উপর ঝাপিয়ে পরে। বড় ছোড়ার মুখে জিম্মি করে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। আমি বাঁধা দিতে গেলে আমাকে বাঁশের লাঠি দ্বারা মাথা বরাবর আঘাত করে । আমি বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করতে সক্ষম হই। এ সময় আমি চিৎকার করে উঠি। তখন ডাকাত দলের একজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার চোখ বরাবর আঘাত করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পরি। আমার মা দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরে চিৎকার করতে থাকে। লোকসমাগমের ভয়ে ডাকাতদল অন্ধকারে মিলিয়ে যায়। 


ডাকাতির ঘটনায় আহত জাহিদ হাসানের বড় ভাই সাংবাদিক সিরাজ আল মাসুদ বলেন,  আমরা জমিজমা বিষয়ে ভাড়রা ইউনিয়নের ভাড়রা বাজারে মিটিং শেষ করি। আমার মা আর ছোট ভাই  (জাহিদ হাসান) নাগরপুর বাসায় চলে যায়। আমি যখন বাসায় এসে ফ্রেস হই তখনই আমার মেঝ ভাই অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী কামরুল হাসান আমাকে ফোন দিয়ে জানায় যে, আমাদের নাগরপুরের বাসায় ডাকাত পরেছে।বাসায় ঢ়ুকে মা ও জাহিদ কে মেরে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে চলে গেছে। জাহিদকে অস্ত্র  ঠেকিয়ে টাকা নিয়ে গেছে ও চোখে গুরুতর আঘাত করেছে। আমি ঘটনা জেনে আমার মাকে ফোন দেই। তখন আমার মা হাওমাও করে কাঁদছিলেন। তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। উপায়ান্তর না দেখে আমি তাৎক্ষণিক নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করি ও আমি নাগরপুরের উদ্দেশ্য রওনা হই। আহত জাহিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে যাই। 

তিনি আরো বলেন,  আমার ভাইয়ের চোখের অবস্থা গুরুতর। আমার ভাই আবার চোখে দেখবে তো?  ডাকাত দল আমার মাকে মেরেছে। আমার মায়ের পায়ে আঘাতের চিহৃ। 

আহত মা জাহানারা আক্তার  জানান,  বাসার চাবি আমার কাছে থাকায় মোটরসাইকেল থেকে নেমে গেইট খুলে ভেতরে প্রবেশ করি। ঘরে ঢ়ুকে বন্ধ দরজা জানালা খুলে দেই। এসময় হঠাৎ চিৎকারের আওয়াজ পাই। উঠানের দিকে এগিয়ে যাই ও  দেখি ১০/১২ জন ডাকাত  আমার ছেলেকে মারধর করছে।মোটরসাইকেলের চাবির জন্য ধস্তাধস্তি করছে।চাবি না দেওয়ায় বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করছে। তার পকেটে তল্লাশি করছে।পকেটে রাখা টাকা নিয়ে যাচ্ছে।  বাঁধা দেওয়ায় বড় ছোড়ার বাট দিয়ে তার চোখে আঘাত করেছে। 

এসময় আমার ছেলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। আমি ছেলেকে বাঁচাতে জাপটে ধরি।আমাকে ডাকাত দলের সদস্যরা লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। আমার গলায় পরিহিত স্বর্ণের চেইনটি দুহাত দিয়ে ধরে এক ঝটকায় ডাকাত দলের এক সদস্য ছিড়ে নিয়ে যায়। যাকে আমি চিনতে পেরেছি।  এসময় আমি চিৎকার করে উঠলে ডাকাতরা দ্রুত পালিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  বলেন,খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনা স্থল পরিদর্শন করি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই ও পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এ ঘটনায় ১ জনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। সকল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শীঘ্রই বিচারের আওতায় আনা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে