অনিয়মের আতুর ঘরে পরিনত হয়েছে নীলফামারী সাব রেজিস্ট্রার অফিস চত্বর। এখানে পদে পদে অনিয়ম আর হয়রানির শিকার হচ্ছেন জমি ক্রেতা-বিক্রেতা। নানা টালবাহানা,সমিতির নামে চাঁদা আদায় আর দলিল লেখকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন আগন্তকরা। অভিযোগ রয়েছে গত ৭ থেকে ৮ বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বিভিন্নভাবে। দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সমিতির নামে অযাচিতভাবে জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা ছাড়াও,জাল খাজনা খারিজ ও ভূয়া খতিয়ান প্রস্তুত করে জমি রেজিস্ট্রেরির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পকেট ভর্তি করা হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে। সমিতির কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্যের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে একাজে জড়িত রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক সাংবাদিকদের জানান। শুধু তাই নয়, নীলফামারী সদরের প্রতিটি মৌজাভিত্তিক দোলা, ভিটা,বসত ভিটা,ডাঙ্গা,বালু পতিত, বাঁশঝাড়, ডোবা ও বাণিজ্যিক শ্রেণির জমির আলাদা আলাদা মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা থাকলেও দলিল লেখক সমিতির নেতারা সাব-রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে যোগসাজশে খতিয়ানে থাকা জমির শ্রেণি ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছেন। এভাবে ডাঙ্গা জমিকে দোলা,বসতভিটাকে পতিত শ্রেণিতে রূপান্তরিত করে ভুয়া খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। তারপর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি পকেট ভারী করেছেন। একই সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে ২০০০ সালের শেষ পর্যন্ত সম্পাদিত বেশির ভাগ দলিলই ভুয়া খারিজ খতিয়ানে করা হয়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, নাম গোপন রাখতে পারলে,শুধু দলিল নাম্বার নয় তারিখ বার পর্যন্ত আপনাদের দেয়া যাবে। কয়েকজন দলিল লেখক জানান,সমিতির অনেক নেতাই রাতারাতি আঙুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হয়েছেন। যাদের কিছুই ছিল না তারা এখন একাধিক বাড়ি,গাড়ি, প্রচুর জমিজমার মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া সমিতির নামে আদায়কৃত টাকা নিয়েও হচ্ছে হরিলুট কারবার। তার কোন হিসাব নেই। অনিয়মের কারণে সমিতির সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলাও হয় বলে জানা গেছে। অপর দিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দলিল লেখক সমিতিকে কুক্ষিগত করে রাখা আওয়ামী মদদপুষ্ট দলিল লেখকরা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন বলে জানানো হয়। অপরদিকে ভুক্তভোগীরা জমি ক্রয়- বিক্রয়ের সময় সমিতির নামে চাঁদা আদায়সহ সব প্রকার হয়রানি বন্ধের দাবি জানান। অনৈতিকভাবে কোটি কোটি আদায়কৃত টাকার কোন হিসাব নেই। দলিল লেখক সমিতির নেতারা তাদের পকেটে ভরেছে ওই সমস্ত টাকা।