সরাইলে বন্ধ ব্রীজ নির্মাণের কাজ, দূর্ভোগে ৩ গ্রামের লোক

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
সরাইলে বন্ধ ব্রীজ নির্মাণের কাজ, দূর্ভোগে ৩ গ্রামের লোক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গত ৮ মাসেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে পোনে ৩ কোটি টাকা মূল্যের নির্মাণাধীন একটি ব্রীজের কাজ। ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে ৩ গ্রামের ২৫ সহস্রাধিক লোক। বৃষ্টি শুরূ হলে কাঁদা পানিতে বাধাগ্রস্ত হবে তাদের স্বাভাবিক চলাফেরা। উপজেলার শাহজাদাপুর গ্রামের খোয়ালিয়ার পাড় এলাকায় খালের উপর ওই নির্মাণাধীন ব্রীজটির অবস্থান। কাজ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, দ্রূততম সময়ের মধ্যেই শুরূ হবে কাজ। 

উপজেলা এলজিইডি অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহাজাদাপুর নিয়ামতপুর ধাউরিয়া গ্রামের শতাধিক বছরের স্বপ্ন ও দাবী ছিল খোয়ালিয়ার পাড়ে ব্রীজ নির্মাণ। আর সেই সাথে মলাইশ-শাহজাদাপুর সড়কটি। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ওই তিন গ্রামের ২৫ সহস্রাধিক লোকের স্বপ্নপূরণ হইয়াও হচ্ছে না। দূর্ভোগ কেন যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে ব্রীজটির দরপত্র আহবান করেন এলজিইডি। ব্রীজটি নির্মাণের চুক্তিমূল্য ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৬০ টাকা। কাজটি পান মেসার্স লোকমান হোসেন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা। কাজ শুরূতে দীর্ঘসূত্রিতা ভাবিয়ে তুলে ওই জনপদের মানুষদের। শুরূ হয় হ্যাঁ হুঁতাশ। অনেক বিলম্বে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ নভেম্বর শুরূ হয় কাজ। নিম্ন মানে নির্মাণ সামগ্রি ও কাজের মান নিয়ে অভিযোগ উঠলে আবারও কিছু দিন বন্ধ থাকে কাজটি। কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে শুরূ হয়ে আবার জুলাই অভ্যূথানের আগেই বন্ধ হয়ে যায়। চলে যায় ঠিকাদারের লোকজন। সেই থেকে অদ্যবধি কাজের কাছে আসছেন না ঠিকাদার। গত ৮/৯ মাসে ব্রীজের কাছ রাখা মালামাল নষ্ট হচ্ছে। বেরিয়ে থাকা রড গুলোতে মরিচা ধরেছে। কিছু রড ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে মাদকাসক্তরা। যাতায়তে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন নারী পুরূষ ও শিশুরা। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ নভেম্বর কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও তা আর হয়ে উঠেনি। ঠিকাদার কাজের সময় ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের জুন পর্যন্ত এক্সটেনশন করলেও মাত্র তিন মাস হাতে আছে। এখন পর্যন্ত শুরূই যখন করতে পারছেন না, শেষ করবেন কবে? স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জুয়েল মিয়া ও গ্রামের বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলাম ক্ষোভের সাথে বলেন, এক বছরের কাজ দেড় বছরেও শেষ করেনি। এখন ঠিকাদার লাপাত্তা। কাজের ৫০-৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ কবে শেষ আল্লাহই ভালো জানেন। তিন গ্রামের লোকজন অবর্ণনীয় দূর্ভোগে আছে। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরাধ ঠিকাদারকে ডেকে কাজটি দ্রূত শেষ করে ভুগান্তি দূর করূন।  এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মো. লোকমান হোসেনের মুঠোফোনে (০১৯১৭-২১৪৪৯৪) একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এলজিইডির সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভূঁইয়া গত ৮/৯ মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ২০ ভাগ শেষ করতে বেশী সময় লাগবে না। ঠিকাদার সম্ভবত দেশের বাহিরে আছেন। এসেই কাজে ধরবেন।