পুষ্পা ২: দ্য রুল মুভিটি রিলিজ হওয়ার পর দুনিয়াজুড়ে ঝড় তুলছেন রাশমিকা মান্দানা ও আল্লু আর্জুন। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক নিয়ে যেমন দুই দেশের মধ্যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, আলোচনা ও সমালোচনা যখন তুঙ্গে ঠিক তখনই ভারতের দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে মন্তব্য করায় নেটিজেনদের সমালোচনায় পারদ ঢেলে দিয়েছেন বাংলাদেশের ইসলামী বক্তা আমির হামজা। তীব্র সমালোচনার তোপে ক্ষমাও চেয়েছেন আমির হামজা। সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে ইসলামী বক্তা আমির হামজা রাশমিকাকে বিশ্বের অন্যতম সুন্দরী হিসেবে আখ্যা দেন। যদিও তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের।
রাশমিকা
মান্দানাকে নিয়ে কি বলেছিলেন আমির
হামজা
একটি
ওয়াজ মাহফিলের ভিডিওতে দেখা যায়, আমির
হামজা বলছেন, এখন বিশ্বে যত
সুন্দর মানুষ আছে; আপনারা ইন্টারনেট
ঘাঁটবেন। ১৫৭টা রাষ্ট্রের মধ্যে চেহারার কাটিংয়ে ১ নম্বরে রয়েছেন
রাশমিকা মান্দানা। নাম শুনেছেন? চেহারার
কাটিংয়ে এখন ১ নম্বরে
আছেন। এই মহিলার দিকে
একটু আল্লাহর নাম নিয়ে তাকাবেন।
দেখেন তো কী সুন্দর
করে আল্লাহ তাকে বানিয়েছেন। এর
চেয়ে শতগুণে সুন্দর ছিল আমাদের আদি
মাতা হাওয়া (আ.)।
ভারতের
দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে মন্তব্যের পর তীব্র সমালোচনা
হয় ইসলামী বক্তা আমির হামজাকে নিয়ে। তার এই মন্তব্যের জন্য আমির হামজা দুঃখ প্রকাশ
করেছেন। দেশবাসী ও
শ্রোতাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন
তিনি। ইসলামী বক্তা মুফতি
আমির হামজা মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টের
মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ
করে ক্ষমা চান আমির হামজা।
তিনি
বলেন, ফ্যাসিস্টের কারাগারে থাকাকালীন এমন কোনো নির্যাতন
নেই, যা আমার ওপর
করা হয়নি। আমার ব্রেনে পর্যন্ত
বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়েছে।
এ কারণে অজান্তেই মুখ দিয়ে অসংলগ্ন
কথাবার্তা বের হয়ে আসছে।
আচরণও আমার নিয়ন্ত্রণে থাকছে
না।
মুফতি
আমির হামজা বলেন, আমি শারিরীক ও
মানসিক কোনোভাবেই সুস্থ না। অন্যদিকে বড়দের
অনুরোধে তাদের দাওয়াতও ক্যান্সেল করতে পারি না।
তবে আমি কথা দিচ্ছি,
পরবর্তী সময়ে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি
ও আমার যথাযথ ট্রিটমেন্ট
নিয়ে মাহফিলে অংশ নেব।
নিছে ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজার ফেসবুক পোস্টটি হুববহু দেওয়া হলো:
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় তৌহিদী জনতা।
আপনাদেরকে
বারবার আশাহত করার জন্য আমি
দুঃখ প্রকাশ করছি,ক্ষমা প্রার্থনা
করছি।
আপনাদেরকে
কিছু কথা বলা জরুরি
মনে করছি। যাতে আপনারা আমার
বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ইনসাফ
করতে পারেন।
ঢালাওভাবে
যেসব কথাবার্তা চারদিকে বলা হচ্ছে তার
সবটুকুই কি সঠিক? নাকি
ভিন্ন বাস্তবতা আছে?
সম্প্রতি
সি-রি-য়া-র
কারাগার থেকে মুক্ত বন্দিদের
চিত্র আপনাদের সামনে। তারা অনেকেই নিজের
নাম পর্যন্ত ভুলেগেছে।
ফ্যাসিস্টের
কারাগারে থাকাকালীন এমন কোনো নির্যাতন
নাই যা আমার উপরে
করা হয়নি। আমার ব্রেনে পর্যন্ত
কারেন্ট শক দেওয়া হয়েছে
ও স্লো পয়জেনিং করা
হয়েছে। বাকী নির্যাতনের কথা
আর না বলি।
আমি
স্বীকার করছি মানসিকভাবে আমি
পুরোপুরি সুস্থ না। শারিরীক ও
মানসিক কোনো দিক দিয়েই
আমি ফিট না।
নিজের
অজান্তেই অসংলগ্ন কথাবার্তা মুখে চলে আসছে।
আমার আচরণও আমার নিয়ন্ত্রণে থাকছে
না। এসব চিন্তা আমাকে
আরো অসুস্থ করে তুলেছে।
আর আমার দেওয়া
বক্তব্য নিয়ে চলমান যে বিতর্ক। সেই
আলোচনাটাতে শুধুমাত্র উক্ত নায়েকার আলাপটুকুই
আমার ভুল হয়েছে আমি
স্বীকার করছি। তবে যদি আলোচনাটি
পুরোপুরি শোনেন তাহলে দেখবেন আলোচনাটি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। ভবিষ্যতে আমি আরো সতর্ক
থাকার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
এখন
আপনারা বলতে পারেন আমি
যেহেতু মানসিক ও শারীরিকভাবে ফিট
না তাহলে এতো মাহফিল কেনো
করছি?
সেক্ষেত্রে
আপনাকে বলবো আপনি কিছুক্ষণ
আমার জায়গায় দাড়ান ভাই প্লিজ! তারপর
ভাবুন।
খোলামেলা
আপনাদেরকে বলছি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল, বি এন পির
কেন্দ্রীয় নেতারা, শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ যখন একটা
মাহফিলের জন্য রিকুয়েষ্ট করে
তখন আমার কি করার
থাকতে পারে বলুন?
শুধুমাত্র
ভি.আই.পিদের রিকুয়েষ্ট
রাখতে গেলেই সাধারণ জনতা তো বহুদূর
জেলা দায়িত্বশীল ও আত্মীয়স্বজনদের রিকুয়েষ্ট
রাখাও সম্ভব হয় না।
অন্যদিকে
ফ্যাসিস্ট পরবর্তী সময়ের অবাধ স্বাধীনতা তাফসির
মাহফিল আয়োজনকে আরো ত্বরান্বিত করেছে।
তার একটি প্রেসার অন্যদিকে
শায়েখ মিজানুর রহমান আজহারী ভাই দেশে না
থাকায় আরো একটি চাপ
সাথে যুক্ত হয়েছে।
সবমিলিয়ে
যথাযথ শারিরীক, মানসিক ও একাডেমিক প্রস্তুতি
গ্রহণ করার সুযোগ পাইনি।
যার ফলেই মাঝেমধ্যে এমন
ত্রুটি,ভুল আমার দ্বারা
হয়ে যাচ্ছে।
আমি
আবারো বলছি আমি সুস্থ
না। অন্যদিকে বাস্তবতার শিকার। যেখানে সুস্থ মানুষের পক্ষেই এতো প্রোগ্রাম, জার্নি
করা অসম্ভব হয়ে যায় সেখানে
আমার মত অসুস্থ ব্যক্তির
বর্তমান অবস্থা কি একটু ভেবে
দেখবেন।
আমি
আপনাদের কাছে আবারো ক্ষমা
চাই এবং এই সিজনে
আমার ভুলভ্রান্তি গুলো দিয়ে প্রকৃত
আমাকে জাজ কইরেন না
দয়া করে।
আমি
কথা দিচ্ছি, পরবর্তী বছরগুলোতে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ও আমার যথাযথ
ট্রিটমেন্ট নিয়ে তাফসির মাহফিলে অংশগ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ। সাথে
গণহারে দাওয়াত নেওয়া বন্ধ করে দিবো।
বিশেষ
দোয়াপ্রার্থী
আমির
হামজা।