নতুন কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানের যোগদানকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে নতুন কোষাধ্যক্ষকে বিতর্কিত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে তার নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নতুন কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ এবং তার যোগদানে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য ববি’র উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনকে দায়ী করেছেন। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওই পক্ষ উপাচার্যের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে উপনীত হয়েছেন। এজন্য বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোশারেফ হোসেন জানান, তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপাচার্য স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন বলেন, বর্তমান উপাচার্য জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করেন না। সাম্প্রতিক দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিতর্কিত নবনিযুক্ত ববি কোষাধ্যক্ষকে শিক্ষার্থীরা যোগদানে বাঁধা দেওয়া সত্বেও উপাচার্য তাকে যোগদানের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যেকারণে উপাচার্যের বিতর্কিত কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীরা তার ওপর আস্থা হারিয়েছেন। যেকারণে সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেছেন। সূত্রমতে, নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ যোগদান করতে আসবেন, এমন সংবাদে বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ২১ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবাদলিপিতে ওই কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ বাতিল করে যোগ্য শিক্ষকদের মধ্য থেকে কাউকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি করা হয়। সূত্রে আরও জানা গেছে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সহযোগিতায় নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষের যোগদানের আগেই নিয়মবহির্ভূতভাবে রাতে এক অফিস আদেশে অফিস, কর্মকর্তা এবং গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রজ্ঞাপন জারি করা ববি’র কর্মকর্তা সহকারী রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) সানজিদা সুলতানা জানান, তাকে উপাচার্য ডেকে নিয়ে অফিস আদেশটি দিতে বাধ্য করেছেন। সার্বিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক রাখা যায়, সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে ববি’র উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করেও তাকে না পাওয়ায় কোন বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।