বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বললেন,
“গঠনমূলক, ইতিবাচক, বাস্তবসম্মত সংস্কারে জামায়াতে ইসলামী পূর্ণ সহযোগিতা করবে। দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর বিষয়ে আমরা দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে চাই না। দেশ ও জাতির জন্য যেটা কল্যাণকর সেই কাজে, সেই পরিবর্তন ও সংস্কারে জামায়াত পরিপূর্ণভাবে ঐকমত্য পোষণ করে। আলোচনার ভিত্তিতে আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমরা করবো।”
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আরও যোগ করে বলেন,
“৫৪ বছরের বাংলাদেশের ব্যাপারে মানুষের ভেতরে ব্যাপক হতাশা আছে। তারা কিছুটা হলেও বঞ্চিত। আমরা যখনই বঞ্চিত হয়েছি, তার প্রতিবাদে প্রতিরোধ হয়েছে। মানুষ রক্ত ও জীবন দিয়ে পরিবর্তন করেছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হলেও স্বাধীনতা পায়নি। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ সংগ্রাম, লড়াই যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম কিন্তু স্বাধীন হইনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু আসলেই স্বাধীন হয়েছি কিনা সময় বলে দেবে।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন,
‘আমরা যারা নেতৃত্বে ছিলাম তারা মানুষের ত্যাগ ও প্রয়োজনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আশা করি, নতুন যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন অতীতের মতো হারিয়ে না যায়। সে জন্য আমাদের অনেক বেশি সাবধান হতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। মৌলিক বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।”
আমাদের দলে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হয়, সেটা প্রচারণা, প্রার্থী ছাড়া এবং প্যানেল ছাড়া গোপন ব্যালেটে হয়। আমাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নো ক্যাম্পেইন, নো ক্যান্ডিডেট। আমরা দেশে এমন নির্বাচন চাই যাকে দেশের মানুষ নির্বাচন বলবে, দুনিয়া নির্বাচন বলবে। গত তিন মেয়াদে দেশে কোনো ধরনের নির্বাচন হয়নি। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় থাকায় দেশে নৈরাজ্য হয়েছে, যার পরিণতি সমগ্র জাতি ভোগ করছি। আমরা এটার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা স্বচ্ছ ও সঠিক নির্বাচন চাই। এ ব্যাপারে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে- বলেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
‘বাংলাদেশের আজকের দুরাবস্থার পেছনে দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি দায়ী। মানুষ দুর্নীতি না করলে দেশে নৈরাজ্য হওয়ার সুযোগ নেই। ভোট ছাড়া নির্বাচিত হওয়া হচ্ছে বড় দুর্নীতি। পরিশ্রম ছাড়া টাকা আয় করা দুর্নীতি। উন্নয়নের নামে টাকা পকেটস্থ করা দুর্নীতি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ জামায়াতের অঙ্গীকার’-যোগ করেন তিনি।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, কার্যনিবার্হী সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আজাদ, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, শিশির মুনির, মহিউদ্দিন সরকার।