পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকে সতর্কবার্তা দিল দিল্লি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকে সতর্কবার্তা দিল দিল্লি

কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারত। উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িকভাবে স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু প্রচারের অভিযোগে পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সংবেদনশীল প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে।

ভারতের সরকারি সূত্র জানায়, পেহেলগাম হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক কাশ্মীরি নাগরিক নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নিষিদ্ধ হওয়া ইউটিউব চ্যানেলগুলোর সম্মিলিত গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩০ লাখ।

নিষিদ্ধ চ্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন, জিও নিউজ, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, রাফতার ও সুনো নিউজের ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম। এ ছাড়া ব্যক্তিগত চ্যানেল হিসেবে সাংবাদিক ইরশাদ ভাট্টি, আসমা শিরাজি, উমর চিমা এবং মুনিব ফারুকের ইউটিউব অ্যাকাউন্টও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স, সামা স্পোর্টস, উজাইর ক্রিকেট ও রাজি নামার মতো চ্যানেলগুলোকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ভারতীয় সরকারি সূত্রগুলোর অভিযোগ, এসব চ্যানেল পেহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছিল, যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি তৈরি করছিল। নিষিদ্ধ চ্যানেলগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করলে এখন ব্যবহারকারীদের একটি বার্তা দেখানো হচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছে, "জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারি আদেশের কারণে এই কনটেন্ট বর্তমানে এ দেশে উপলভ্য নয়।"

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদানও সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এর জবাবে ইসলামাবাদ সিমলা চুক্তি-সহ ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিতের হুমকি দিয়েছে।

এদিকে, কাশ্মীর হামলা নিয়ে বিবিসির প্রকাশিত একটি শিরোনাম — "কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তান ভারতীয়দের জন্য ভিসা স্থগিত করেছে" — ভারতের তীব্র প্রতিক্রিয়া কুড়িয়েছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিবিসি ইন্ডিয়ার প্রধান জ্যাকি মার্টিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, এই ধরনের প্রতিবেদনে সন্ত্রাসীদের ‘জঙ্গি’ বলে না উল্লেখ করায় ভারতের আপত্তি রয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বিবিসির রিপোর্টিংয়ের ওপরও নজরদারি চালানো হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

ভারতীয় কর্মকর্তাদের মতে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের সময় দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা অপরিহার্য, যাতে ভুয়া তথ্য বা উস্কানিমূলক ভাষ্য সমাজে বিভ্রান্তি না ছড়ায়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে