প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী থেকে সংহৃহীত ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু গতকাল সোমবার থেকে বিক্রি শুরু করা হয়েছে। এবার প্রতি কেজি রেনুর মূল্য দেড় লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গড়দুয়ারা ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর। প্রথম দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেনু বিক্রি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এবার প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় রেনু ফোটানোর সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্রেতাদের উপস্থিতি নিয়ে শংকায় রয়েছে ডিম আহরনকারী ও রেনু উৎপাদনকারীরা। কারন বৃষ্টির কারনে রেনু উৎপাদন কেন্দ্রে যাতায়াতের রাস্তা বন্যা ও ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। চাহিদা ও ক্রেতা সমাগমের উপস্থিতি উপর নির্ভর করে রেনুর দাম বাড়ানোর আদেশ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে এবার হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে কি পরিমান রেনু উৎপাদন হয়েছে তার বাজার মূল্য কত হতে পারে এজন্য আজ (মঙ্গলবার) দায়িত্বশীল বিভাগ বৈঠক করার কথা রয়েছে। একটি অসাধু চক্র কৃত্রিম রেনু বিক্রি নিয়ে তৎপর বলে আশংকা করছেন ডিম সংগ্রহকারী ও রেনু উৎপাদনকারীরা। এই অসাধু চক্রের ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রেনু পোনা বিক্রেতারা। কারন এই অসাধু চক্র হালদা নদীর ঐতিহ্য ও সুনাম নস্ট করছে বলে ও তারা উল্লেখ করেন।
জানা যায় গত সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাতে ও গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১১টার দিকে মা মাছ দুই দফায় নদীতে নমুনা ডিম ছাড়ে। একই দিন দিবাগত রাতে নদীতে মাছ পুরা দমে ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর অংকুরি ঘোনা থেকে কর্ণফুলীর মোহনা ছায়ার চড় পর্যন্ত অন্তত ১৪ টি স্থানে মাছ ডিম ছেড়েছে। এইসব স্থান থেকে সাড়ে পাঁচ শ ডিম সংগ্রহকারী আড়াই শ নৌকায় ১৪ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করে। গত শনিবার থেকে নদী থেকে আহরিত ডিম থেকে রেনু ফোটানোর কাজ শুরু করে ডিম আহরনজারীরা। সরকারি ৪ টিসহ ১২ টি বেসরকারি হ্যাচারী ও ৬০ টি মাটির কুয়ায় ডিম থেকে রেনু ফোটানোর কাজ করছে ডিম সংগ্রহকারীরা। এবার প্রথম দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেনু বিক্রির প্রত্যাশা করছেন রেনু উৎপাদনকারীরা।
রাউজান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের প্রদত্ত তথ্যমতে ৪০ বালতি ডিম থেকে এক কেজি রেনু উৎপাদন হয় বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান। তার হিসাব মতে হালদা নদী থেকে এবার সংগৃহীত ১৪ হাজার কেজি ডিম থেকে হিসাব অনুযায়ী রেনু উৎপাদন হতে পারে।
হালদা থেকে, সংগৃহীত ডিম থেকে কি পরিমান রেনু উৎপাদন হতে পারে, উৎপাদিত রেনুর বাজার মূল্য কত হতে পারে সে বিষয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার( ৩ জুন) মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নৌ পুলিশ, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার্স রিচার্স ল্যাবরেটরি আনুষ্ঠানিক সভায় মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন হালদা গবেষক অধ্যাপক ড মঞ্জুরুল কিবরিয়া। সেই সভায় সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।