মধ্যরাতে ছিনতাইকারীদের মুখোমুখি তাসরিফ খান

এফএনএস বিনোদন: : | প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:১৫ এএম : | আপডেট: ১৪ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
মধ্যরাতে ছিনতাইকারীদের মুখোমুখি তাসরিফ খান

ঢাকার রাস্তায় ছিনতাইকারীর উৎপাত বেড়েছে- এমন অভিযোগের কথা প্রায়ই শোনা যায়। অনেকে আবার ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সেই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন ফেসবুকেও। এবার এমন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন কুঁড়েঘর ব্যান্ডের গায়ক তাসরিফ খান। তবে ছিনতাইয়ের কবলে তিনি পড়েননি। বরং তাসরিফরা এগিয়ে যাওয়ায় ছিনতাইকারীদের কবল থেকে উদ্ধার হয়েছেন এক ব্যক্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন তাসরিফ। গত বুধবার দিবাগত রাতে এই দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন তারা ক’জন। সবাইকে সাবধানে চলার পরামর্শ দিয়ে তাসরিফ লিখেছেন, ‘১৮ তারিখ দিবাগত রাত ২টার ঘটনা। মিরপুর ২ নাম্বার একটা প্র্যাকটিস পেড থেকে জ্যামিং শেষ করে আমড়া কুঁড়েঘর ব্যান্ডের প্রায় সবাই খাবার হোটেলের দিকে যাচ্ছিলাম। মিরপুর ২ নাম্বার ওভারব্রিজের পাশে, পেট্রোলপাম্পের ঠিক সামনে খেয়াল করলাম ৫-৬ জন মিলে একটা লোককে ধস্তাধস্তি করছে আর লোকটা খালি গায়ে কোনোরকম ছুটে যাবার চেষ্টায় কেউ বাঁচান ভাই বলে চিৎকার করছে।’ তাসরিফরা এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা নাটকীয়ভাবে তাদের ভোল পালটায়। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে এই গায়ক লিখেছেন, ‘ব্যান্ডের ৩ জন একসঙ্গে ছিলাম আর বাকিরা সামনে পেছনে মিলিয়ে। আমি এগিয়ে গিয়ে গলা মোটা করে কী সমস্যা জিজ্ঞেস করে থামতে বলার সঙ্গে সঙ্গে খালি গায়ের লোকটা কোনোরকম ছুটে দৌড় দেয় আর ওই ৫-৬ জন আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কোনোকিছু অনুমান করার আগেই ওরা আমাদের কাছে এসে বিচারের স্বরে বলে যে “ভাই ওইডা মাদক ব্যবসায়ী”।’ যোগ করে তিনি বলেন, ‘আমি এই কথায় কয়েক মুহূর্তের জন্য কনফিউজড হয়ে যাই। আসলেই পালানো লোকটা মাদক ব্যবসায়ী নাকি এঁদের নিজেদের কোনো ঝামেলা নাকি এরা ছিনতাই করছিল, ভাবতে ভাবতে আরও কয়েক কদম এগিয়ে যাই ওই খালি গায়ে লোকটা যেদিকে দৌড়াল সেদিকে। খেয়াল করলাম খালি গায়ের লোকটা আসলে পালায়নি। থানা একেবারে পাশেই থাকায় লোকটা থানার সামনে দাড়িয়ে চিৎকার করে পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করছে।’ এই সুযোগে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা সে কথা উল্লেখ করে গায়ক বলেন, ‘ঘটনা বুঝতে আর বাকি রইল না। পেছন ফিরে দেখি ওরা তড়িৎ গতিতে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিয়েছে। সামনে যে বসা তার হাতে টিপ চাকু। মাথায় এল এরা যখন কাছে এসেছিল তখন এঁদের কয়েকজনের একহাত গায়ের পেছনে লুকানো ছিল। তার মানে এঁদের প্রায় সবার কাছেই ধারালো অস্ত্র কিংবা চাকু ছিল। গাড়িটা টান দেওয়ার সাথে সাথে একটা ছবি তুললাম যেন নাম্বার প্লেটটা পড়া যায়। গাড়ির ছবিটা লাইভ মুড হওয়ায় ছবিটা ঝাপসা হয়েছে কিন্তু নাম্বার বোঝা যায়। ঢাকা মেট্রো-গ/২৫৪৬৩৩।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘লোকটা দৌড়ে আমদের দিকে এগিয়ে এসে কান্নার স্বরে বলল “ভাই আপনেরা আগায় না আইলে আমারে মাইরলতো ওরা।” ওরা পালানোর পর এবার একটু ভিড় বাড়লো যে ভিড়টা ছিনতাইয়ের সময়ে হলে হয়ত এই ছিনতাইকারীরা এত্ত সাহস পেতই না। তৎক্ষণাৎ থানায় গিয়ে ওয়ারলেস অপারেটরকে এই গাড়ির নাম্বার জানালাম এবং ওসি তদন্ত যিনি ছিলেন উনাকেও গাড়ির নাম্বার দিলাম। উনারা বললেন উনারা ধরার চেষ্টা করবেন এবং দুইজন এসআইকেও দেখলাম সিভিল ড্রেসে একটু তৎপরতার সঙ্গে বলছিল এঁদেরকে তারা ধরবে।’ তাসরিফ খান আরও বলেন, ‘অদ্ভুত ব্যাপার হলো খাবার খাওয়া শেষ করে যখন আমাদের ড্রামার শান্ত রিকশা করে ওর বাসায় ফিরছিল তখন ওই গাড়িকে মিরপুর-১০ আল হেলালের পাশের সিএনজি পাম্পে স্টার্ট করা অবস্থায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে আবার আমাকে কল দিয়ে জানায়। আমি কল দিয়ে থানার এসআইকে জানাই। এসআই ভাইজান আমাকে কিছুক্ষণ পর কল করে জানান উনারা লোক পাঠিয়েছিলেন কিন্তু গাড়িটা হয়ত ততক্ষণে ওই জায়গা ত্যাগ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে ঢাকায় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সিসিটিভি আছে, পুলিশের কাছে গাড়ির নাম্বার আছে, এমনকি বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্টও রয়েছে তারপরও আমি জানি না এই গাড়ি এখনও আটক হয়েছে কিনা অথবা কেন এখনও এই গাড়িটা কিংবা ওই সন্ত্রাসীদের ধরা গেল না? এঁদের হাতে যদি আল্লাহ না করুক, কেউ খুন হয় কিংবা আমার আপনার পরিবার বড় বিপদে পড়ে তবে এই দায়ভারটা নিবে কে?’ সবশেষে সবাইকে সতর্কভাবে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন তাসরিফ খান। লিখেছেন, ‘কী হবে জানি না তবে নিজের এবং নিজের পরিবারকে সাবধান করুণ, সতর্ক করুণ। রাতে একা চলাচল থেকে বিরত থাকুন। এইসব আজন্ম সাফারিংসগুলো বোধহয় আমড়া কপালে করে লেখায় নিয়েই আসছিলাম যেগুলা প্রতিনিয়তো আমাদের মেনে নিতে হয় কিংবা সামনেও আরও মেনে নিতে হবে।’ 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW