দেশের কিংবদন্তি লালনসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েকদিনের আইসিইউ জীবনের পর স্বাস্থ্যসচেতনতার মাধ্যমে কেবিনে স্থানান্তরিত হয়েছেন, যা শিল্পী ও তাঁর পরিবারের জন্য একটি বড় সান্ত্বনার খবর। শুক্রবার (১২ জুলাই) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রীয় (আইসিইউ) অবস্থান থেকে তাঁকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। এর আগে তীব্র শ্বাসকষ্ট, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, রক্তে সংক্রমণ এবং কিডনি বিকল হয়ে গুরুতর অবস্থায় শিল্পী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
তার ছেলে ইমাম জাফর নোমানী সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্য উন্নতির খুশির খবর শেয়ার করে অনুরোধ করেছেন, হাসপাতালে অনাবশ্যক ভিড় এড়াতে এবং ভিজিটর নিয়ন্ত্রণে রাখতে, যাতে ফরিদা পারভীন দ্রুত সুস্থ হতে পারেন।
ফরিদা পারভীন ৫ জুলাই থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় ৯ জুলাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁকে সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করানো হচ্ছে। আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরের পর এখনো পূর্ণ সুস্থ নন, তবে পরিবার ও চিকিৎসকরা আশাবাদী, শিগগিরই তিনি বাড়িতে ফিরে আসবেন।
ফরিদা পারভীন দেশের সংগীত জগতে এক অমর নাম। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। ১৯৮৭ সালে সংগীতে অসাধারণ অবদানের জন্য একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ২০০৮ সালে জাপানের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারে সম্মানিত হন।
শিল্পীর স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম বলেন, ‘গত শনিবার দুপুরে ফরিদার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি অল্প অল্প কথা বলতে পারছেন। ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে।’ হাসপাতালের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ আমিনুল ইসলাম জানান, ‘শিল্পীর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো, তবে এখন তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে।’
সংগীতপ্রেমী ও দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ফরিদা পারভীনের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন এবং তাঁর অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।