পাওনা টাকা দিতে না পারায় শ্রমিক দম্পতিকে নির্যাতন

ঝিনাইদহে চাতাল শ্রমিকের লাশ উদ্ধার

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ২৩ জুলাই, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
ঝিনাইদহে চাতাল শ্রমিকের লাশ উদ্ধার

পাওনা টাকা দিতে না পারায় ঝিনাইদহে এক শ্রমিক দম্পতিকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এতে নেছার আলী ওরফে আলমগীর (৫০) নামের এক শ্রমিক মারা গেছেন। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার সংলগ্ন সরকার এন্টার প্রাইজ নামের একটি চাতালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নেছার আলী যশোন চৌগাছা উপজেলার কান্দি গ্রামের মৃত সোনাই মন্ডলের ছেলে। নির্যাতনের শিকার দম্পতি সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার এলাকায় বসবাস করেন।

নেছার আলীর স্ত্রী দিপালী খাতুন অভিযোগ করে বলেন, টাকা ধার নিয়ে দিতে না পারাই আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। সোমবার সকালে কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার বাজারের একটি হোটেলে খাবার খাচ্ছিলাম। খবর পেয়ে পাওনাদাররা আমাদের হোটেল থেকে জোর করে ধোরে নিয়ে যায়। সেখানে টাকার ব্যাপারে একটি জায়গায় স্থানীয় মেম্বর ও পুলিশের উপস্থিতিতে শালিশী বৈঠক হয়। তখন আমার বোন শিফালী পাওনা টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে চাতাল ব্যবসায়ী শফিকুলের পাওনা দেড় লক্ষাধিক টাকা ফেরত দিই। এরপরও আমাদেরকে জোর করে ধোরে নিয়ে আসে। রাতে চাতালের দুই তলায় একটি রুমে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখে। সকালে আমার সামনে আমার স্বামী নেছার আলীর পায়ে লাঠি দিয়ে দুটি বাড়ি মারে।সে সময় প্রতিবাদ করলে শরিফুলের পিতা আমাকে ধাঁক্কা দিতে দিতে নিচের তলায় নিয়ে আসে এবং একটি কক্ষে আটকে রাখে। প্রায় ১০ মিনিট পর আমার স্বামীর মৃত দেহ দ্বিতীয় তলা থেকে বের করে একটি গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে আসি।আমার স্বামীকে ওরা মেরে ফেলেছে বলে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন নেছার আলীর স্ত্রী দিপালী।

দিপালী খাতুনের বড় বোন শিফালী খাতুন বলেন, আমার বোনের স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। শরিফুলের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ধার নিয়েছিল আমার বোনের স্বামী । সে টাকা আমি সোমবার পরিশোধ করে দিয়েছি। আবার কি কারনে রাতে ঘরের মধ্যে তালা লাগিয়ে আটকে রেখে সকালে মারধর করা হলো, আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সরকার এন্টার প্রাইজ চাতাল মালিক আরশাদ আলী ও চাতাল ব্যবসায়ী শরিফুল পাওনা টাকার জন্য শ্রমিক দম্পতিকে পার্শ্ববর্তী কোটচাদপুর উপজেলার তালসার বাজার থেকে ধরে নিয়ে আসে। তাদের কাছে ডাকবাংলা বাজার এলাকার রহিম মুন্সি এক লাখ ২০ হাজার ও শরিফুল দেড় লক্ষ টাকা পেত। সোমবার তাদেরকে ধরে নিয়ে আসার পর শরিফুলের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে নেছার আলীর পরিবার এবং রহিম মুন্সির পাওনা টাকা সময় নিয়ে পরিশোধ করলেও হবে বলে জানা যায়। শরিফুলের টাকা ফেরত দেওয়ার পরও এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনা এলাকাবাসী আশা করিনি।

ডাকবাংলা চাউল কল মালিক সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন ভান্ডারী বলেন, আমার বাজারে মোট ৯৩টি অটো ও সেমি অটো রাইচ মিল রয়েছে। শ্রমিকরে কারণে মিল মালিকদের মাঝে মধ্যে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এদেরকে অগ্রিম টাকা দিয়ে চাতালে নিয়ে আসতে হয়। তবে এই শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা শুনে হাসপাতালে এসেছি। ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,মরদেহ ময়না তদন্ত করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত চলছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে