সৈয়দপুর শহরের রাস্তা-ফুটপাথ দখল করে চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যত্রতত্র ছোট বড় যানবাহন রাখায় সঙ্কুচিত হয়ে আছে শহরের রাস্তাগুলো। বাজারের সড়ক দখল করে বসেছে নানা ধরনের দোকানপাট। এ ছাড়া দিনের বেলা শহরে অবাধে ঢ়ুকছে কাভার্ড ভ্যান, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তি বাড়ছে পথচারীদের।
সরেজমিন দেখা গেছে,শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশেই ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের ভেতরের অংশকে বানিয়েছেন গোডাউন। আর সামনের ফুটপাথ ব্যবহার করছেন শোরুম হিসেবে। এতে ফুটপাথ ও সড়ক হয়ে গেছে একাকার। ফলে পথচারীদের ফুটপাথ আর রাস্তা দিয়ে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই তারা এভাবে দোকানদারি করছেন।
দেখা গেছে, থানার সামনে থেকে বিমানবন্দর, এক নম্বর রেল ঘুন্টি পাঁচমাথা মোড় থেকে বাস টার্মিনাল, পোস্ট অফিসের সামনে থেকে শহীদ ডা. শামসুল হক সড়ক,মদিনা মোড় থেকে কুন্দল, পৌর সবজি বাজারের সামনে থেকে শহীদ জহুরুল হক রোড, জিআরপি ক্যান্টিনের সামনে থেকে শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়ক পর্যন্ত ফুটপাথ, রাস্তার কিছু অংশ ও খালি জায়গায় এক হাজারের অধিক দোকান রয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এসব দোকানে কেনাবেচা। বেশ কিছু খাবার হোটেলের সামনে রাস্তার কিছু অংশ দখলে নিয়ে করা হয়েছে পার্কিং স্পেস। এখানে গ্রাহকদের মোটরসাইকেল,মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার পার্কিং করে রাখা হয়। দিনের বেলা শহরের ভেতর ভারী যান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই অবাধে ঢ়ুকছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান। শহীদ জহুরুল হক সড়কে সারা দিনই রাখা থাকে সারি সারি ট্রাক, পিকআপ। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে ওই সড়কে।
নিয়ামতপুর সরকার পাড়ার মোঃ ইয়াসিন আলী সরকার বলেন,রাস্তাগুলো চওড়া হলেও বেশি অংশ দখল করে ব্যবসা করছেন হকার ও দোকানিরা। চলাচল করার মতো জায়গাটুকুও ফাঁকা পাওয়া যায় না।' বিমানবন্দর সড়কের ফুটপাথের এক দোকানদার বলেন, তিনি এখানে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ব্যবসা করছেন। এ জন্য প্রতিদিন তাকে টাকা দিতে হয় কয়েকটি দপ্তরে।
সৈয়দপুর মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, সড়কের ফুটপাথ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ বার বার নেয়া হয় পৌরসভার পক্ষ থেকে। কিন্তু কেন যেন তাদের কাজে ভাটা পড়ে।
সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিজেই সড়কে ট্রাফিকের কাজ করেছি।
যানজট লাগার অনেক কারণ এখানে কাজ করে থাকে। প্রতিদিন সৈয়দপুর থেকে ঢাকা,রাজশাহী,খুলনা,যশোহর ৮ টি ট্রেন চলাচল করে। এ সময় লেগে যায় যানজট। অতিরিক্ত পরিমান অটোরিকশা, অটোভ্যান তার সাথে যোগ হয়েছে সিএনজি। ব্যবসায়িক শহর হওয়ায়,পণ্য লোড আনলোড করতে মাঝে মধ্যে হালকা বা ভারী যানবাহন প্রবেশ করে শহরে। এ সময়ও লেগে যায় যানজট। শহরে যানজট নিরসনে স্থায়ী কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সৈয়দপুর পৌর প্রশাসক নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ছোট শহর লোক সংখ্যা বেশী। শুধুমাত্র একটিই হল প্রধান রাস্তা। ফলে যানজট লেগে থাকে। তারপরও আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সড়ক ও ফুটপাথ দখল করে যারা ব্যবসা করছেন,বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।