সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত ৭, সারি সারি লাশ দাফন

এফএনএস (মোঃ সাইফুল ইসলাম শাহিন; দৌলতপুর, কুষ্টিয়া) : | প্রকাশ: ২৫ জুলাই, ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত ৭, সারি সারি লাশ দাফন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের অসুস্থ পুত্রবধুকে দেখতে যাওয়ার সময় নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত একই পরিবারের ৭ জনসহ নিহত ৮ জনের মরদেহ বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে আসলে সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মরদেহ দেখতে স্বজন ও গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ বাড়িতে উপস্থিত হয়। এ সময় স্বজন আর গ্রামবাসীর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে। একই পরিবারের এমন সারি সারি লাশ দেখে বাক হারিয়ে ফেলেন অনেকে। সকালে যারা সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন তারাই সন্ধায় ফিলে এলেন লাশ হয়ে। এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশিরা। একই পরিবারের সারি সারি লাশ ও পরপর মরদেহ কবর দেয়ার ঘটনা গ্রামে আগে কখনও ঘটেনি। এদিকে বুধবার সন্ধায় নিহতদের লাশ গ্রামের বাড়ি পৌছালে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা সেখানে যান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী নিহত পরিবারগুলোর বাড়িতে গিয়ে তাদেকে সান্তনা দেন। এ সময় নিহত মাইক্রোবাসের চালক সাহাব হোসেন রুবেলের পরিবারের হাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহয়তা প্রদান করেন। নিহত জাহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহতদের দাফনের জন্য বুধবার সারাদিনে কবর প্রস্তুত করার হয়। ধর্মদহ গ্রামে পাশাপাশি চারটি কবর খোড়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় সেখানে দাফন করা হয় জাহিদুল ইসলাম ফরাজী, তার স্ত্রী সেলিনা বেগম, চাচাতো বোন আয়োয়ারা বেগম, চাচাতো ভাবী আমেনা খাতুন আনুর। এর কিছু পর জাহিদুলের ছোট বোন রাসনায়ারা আক্তার ইতির দাফন হয় পাশের গ্রামে তার শশুরবাড়ি প্রাগপুরে। গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামে দাফন হয় শাশুড়ি আঞ্জুমানয়ারা খাতুন, শালিকা সীমা খাতুনের। এর আগে বুধবার রাতেই ধর্মদহ গোরস্থানে দাফন করা হয় মাইক্রোবাসের চালক সাহাব হোসেন রুবেলের। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহিদুলসহ অন্যদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে বাবা মার মৃত্যুর খবর শুনে কাতার থেকে বুধবার রাতেই দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন নিহত জাহিদুল ফরাজির বড় ছেলে ও তার ভাই শহীদুলের ছেলে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি পৌছেছেন। জাহিদুলের ভাই ও আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিসিয়র সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতদের মধ্যে আমেনা খাতুন আন্নু তার স্ত্রী। সাজানো পরিবার। নিমিষেই সব শেষ হবে গেল। বুধবার সকাল ১০টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রামে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের আড়াইমারি তরমুজ পাম্বেপর নিকটে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নিহত হয় একই পরিবারের ৭জন ও চালকসহ ৮ জনের। নিহতদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ ও দুই জনের বাড়ি গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামে। নিহতরা হলেন- জাহিদুল ইসলাম ফরাজী, তার স্ত্রী সেলিনা বেগম, বোন রোসনায়ারা আক্তার ইতি, চাচাতো বোন আয়োয়ারা বেগম, ভাবী আমেনা খাতুন আন্নু শাশুড়ি আঞ্জুমানয়ারা খাতুন, শালিকা সীমা খাতুন এবং মাইক্রোবাসের চালক সাহাব হোসেন রুবেল। নাটোরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত গাড়ি চালকের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের আর্থিক সহায়তা প্রদান: নিহতের স্বজনদের সমবেদনা বাচ্চু মোল্লার নিজস্ব প্রতিবেদক। অসুস্থ পুত্রবধুকে দেখতে যাওয়ার সময় নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত দৌলতপুরের একই পরিবারের ৭ জনসহ নিহত ৮ জনের পরিবারকে সান্তনা জানাতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ধর্মদহ ফরাজিপাড়ায় দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী। এ সময় তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাথে কথা বলেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এরপর যান একই গ্রামের মাইক্রোবাসের চালক সাহাব হোসেন রুবেলের বাড়িতে। সেখানে রুবেলের বাবা ও স্ত্রীসহ স্বজনদের সাথে কথা বলে তাদের সান্তনা দেন। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রুবেলের লাশের দাফন ও প্রয়োজনীয় খরচের জন্য তার বাবা ও স্ত্রীর হাতে আর্থিক সহায়তার প্রদান করেন। এদিকে বুধবার নিহতদের লাশ গ্রামের বাড়ি পৌছালে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা সেখানে যান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। দুর্ঘটনায় স্ত্রী হারানো আদাবাড়িয়া ইঊনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শহীদুল ইসলামকে সান্তনা প্রদান করেন। এর আগে মরদেহ বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে আসলে সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মরদেহ দেখতে স্বজন ও গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ বাড়িতে উপস্থিত হয়। এ সময় স্বজন আর গ্রামবাসীর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে। একই পরিবারের এমন সারি সারি লাশ দেখে বাক হারিয়ে ফেলেন অনেকে। সকালে যারা সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন তারাই সন্ধায় ফিলে এলেন লাশ হয়ে। এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশিরা। একই পরিবারের সারি সারি লাশ ও পরপর মরদেহ কবর দেয়ার ঘটনা গ্রামে আগে কখনোও ঘটেনি।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে