রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হলো আরও একটি নিষ্পাপ প্রাণ। দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই শিশুর মৃত্যুতে এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টা ৫ মিনিটে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যায় মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল মুসাব্বির মাকিন (১৩)। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তার পক্ষে আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। তার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে, বাবা মো. মহসিন একজন স্যানিটারি ব্যবসায়ী।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে মারা যায় একই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিম আফরোজ আইমান (১০)। শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হওয়া এই শিশুটি বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বসবাস করত। তার পৈতৃক নিবাস শরীয়তপুর জেলায়। বাবা ইসমাইল হোসেন একজন ব্যবসায়ী।
দুই শিশুর মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি বলেন, "দুজনই সংকটাপন্ন অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি ছিল। মাকিনের শ্বাসনালিও দগ্ধ হয়েছিল।"
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর সোয়া একটার দিকে মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভয়াবহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৩২ জন এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৫১ জন।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২০ শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক এবং ২ জন অভিভাবক। নিহতদের পরিচয় ও সংখ্যা নিয়ে সাময়িক বিভ্রান্তি থাকলেও এখন তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সামরিক সরঞ্জামের ব্যবস্থাপনা এবং দায়-দায়িত্ব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।