কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় খাবারে বিষ মিশিয়ে মোঃ রাব্বি ইসলামকে(২১) হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার নববিবাহিত স্ত্রী মিম খাতুনের(১৮) বিরুদ্ধে। গত ৭ই ডিসেম্বর ম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। রুপপুর পারমানবিকের আর্গন ওয়েল্ডার (টিআইজি) পদে কর্মরত রাব্বি উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের মোওলাহাবাসপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে। এ বিষয়ে গত ১১ ই ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯ টায় ভেড়ামারা থানায় নিহতের বাবা রবিউল ইসলাম মিম খাতুনকে প্রধান আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সরেজমিনে গিয়ে রাব্বির মা আমিনা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২০শে নভেম্বর(বুধবার) প্রতিদিনের মতো তিনি খাওয়ার রান্না করেন। মিম রাব্বির জন্য খাবারের বাটি প্রস্তুত করে দেয়। কর্মস্থলে গিয়ে রাব্বি দুপুরে সেই খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখানেই বেশ কয়েকবার বমি হল। পরবর্তীতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হলে ডাক্তার দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য রেফার্ড করে। রাতে রাব্বিকে দেওয়া খাবারের বাটি চেক করে দেখা যায় নীল আকার ধারণ করা অবশিষ্ট তরকারি দিয়ে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। রাব্বির মা বলেন, এই খাবারেই মিম বিষ মিশিয়ে ছিল বলে আমরা ধারণা করছি। গত ৩ মাস আগে মিমের আপত্তি সত্ত্বেও আমার ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের বৈবাহিক সম্পর্কও ভালো ছিল না। বিয়ের পর জানতে পারি, তার সুইট নামের একটা ছেলের সাথে ৩ বছরের প্রেম ছিল। আমার ছেলে না থাকলে ঘরের দরজা বন্ধ করে মিম সারাদিন অন্য পুরুষের সাথে মোবাইলে কথা বলতো। আমার ছেলে তাকে নিয়ে বারবার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করত আমার কাছে। সে আমার ছেলেকে পছন্দ করত না। রাব্বির বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মোহাইমেনুল হক আতিককে দেখালে তিনি বলেন, আপনার ছেলের শরীরে প্যারাকুয়েট (ঘাস মারার বিষ) বিষের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।তার পরামর্শে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে সে মারা যায়। মিম খাতুন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার স্বামীকে আমি কেন বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করতে যাব। আমার সুখের সংসার। তার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।বিয়ে উঠানোর পর শ্বশুর বাড়িতেই আমি বেশি দিন থেকেছি। খারাপ সম্পর্ক হলে তো কবেই চলে আসতাম। আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, রাব্বির মৃত্যুর বিষয়ে তার বাবার দেওয়া অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রাথমিক মেডিকেল রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে শরীরে বিষের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই আমাদের টিম তদন্ত শুরু করেছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেলে আইন অনুযায়ী অধিকতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।