নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক শিক্ষক দম্পতি লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও অফিস স্টাফদের হাতে তারা লাঞ্ছিতের শিকার হন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজ ও সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠে।
ভুক্তভোগী দম্পতি হলেন উপজেলার ফতেপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক তাজিবুল হক ও প্রসাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজনীন নাহার। এ ঘটনায় শাস্তির দাবী জানিয়ে আজ শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রিফাত বিনতে জান্নান লিয়া, প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের চালক ইমন, নৈশপ্রহরী সোহেল রানা, স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল হক ও বাপ্পি নাগ এবং লাঠিয়াল বাবলু। চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত শুক্রবার বিকেলের সিফটে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ভুক্তভোগী তাজিবুল হক বলেন, ‘স্ত্রী নাজনীন নাহার ও আমার চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। এ সময় জরুরি বিভাগের ভেতরে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত গল্পে মগ্ন ছিলেন। এ কারণে ভেতরে প্রবেশ করতে নিষেধ করায় আমরা বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। এর বেশ কিছু পরে ভেতরে প্রবেশ করলেও ডাক্তার আমাদের ওপর নাখোশ হন।’
শিক্ষক তাজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে চিকিৎসা দিলেও আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এ সসময় আমি প্রেসার মাপার কথা বলায় বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। আমাকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে তিনি কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ দৃশ্য মোবাইলফোনে ধারণ করতে গেলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।’
এক পর্যায়ে চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাতের নির্দেশে জরুরি বিভাগের বাইরের বারান্দায় প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের চালক ইমন, নৈশপ্রহরী সোহেল রানা, স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল হক ও বাপ্পি নাগ এবং লাঠিয়াল বাবলু চড়াও হয়ে শিক্ষক দম্পতিকে মারধর করে। পরে তাদের টেনে হিঁচড়ে জরুরি বিভাগের ভেতরে নিয়ে হেনস্তার পর আটকে রাখা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক রিফাত বিনতে জান্নাত বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে আসা দম্পতিকে সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রেসার মাপাকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে রোগী তাজিবুল হক মোবাইলফোনে আমার ছবি ধারণ করে। এনিয়ে পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে তারা।’
মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক তাসনিম হোসেন আরিফ বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।