ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ধরমন্ডল ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ (২৪) বাদী হয়ে ঢাকার রামপুরা থানায় হত্যার উদ্যেশ্যে মারধরের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য মো. ওয়াকিল উদ্দিন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যসহ ৯৯ জনকে আসামী করা হয়েছে। ঢাকার ওই মামলায় সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুরের বিএনপি’র তিন নেতা রফিকুল ইসলাম, সেলিম খাদেম ও রাহুল ভৌমিককে আসামী করেছেন। মামলাটি নথিভুক্তির ২১ দিন পরও আসামীদের চিনেন না বাদী আব্দুল আজিজ। তারা আওয়ামী লীগের কে কোন পদে আছেন তাও জানেন না বাদী আজিজ। তবে মিথ্যা বানোয়াট মামলার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতা বলছেন, এ গুলো মামলা নয়। টাকা কামাইয়ের কৌশল। যুবদল নেতার মামলায় বিএনপি যুবদল ছাত্রদল নেতা আসামী হবে কেন? মামলা, ভুক্তভোগি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ই আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সকলের সাথে স্বস্থ্যির নি:শ্বাস ফেলেছিলেন ওই তিন নেতা। কিন্তু তাদের সেই স্বস্থিকে দীর্ঘ স্থায়ী হতে দেননি নাসিরনগরের যুবদল নেতা আজিজ। গত ৪ নভেম্বর ঢাকার রামপুরা থানায় আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে নামীয় ৯৯ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫০-৬০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়েছে রামপুরা থানাধীন বিটিভি ভবনের সামনে আসামীরা বেআইনী জনতাবদ্ধে মারাত্বক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া হত্যার উদ্যেশ্যে ছাত্রজনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে দাঙ্গা বাধায়। পরে আন্দোলনরত ছাত্র জনতাকে মারধর করে গুরূতর জখম করে। ওই মামলায় সরাইলের শাহজাদাপুর ইউপি বিএনপি’র ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া খাদেমকে ইউপি আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক লিখে ৩৪ নম্বর আসামী করা হয়েছে। ২০২২ সালে অনুমোদিত ইউপি যুবদলের (বর্তমান কমিটির) সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, ২০০৬ সালে ইউপি ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক, ২০০০ সালে ইউপি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৯৪ সালে ছাত্রদলের সদস্য মো. রফিকুল ইসলামকে মামলার ৩৭ নম্বর ও ২০০৬ সালে ইউপি ছাত্রদলের সদস্য রাহুল ভৌমিককে ৩৫ নম্বর আসামী করা হয়েছে। তারা এখন উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও আতঙ্কের দিনরাত পার করছেন। বিএনপি নেতা সেলিম খাদেম ও যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৫টি বছর দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশ পালন করতে রাতে ঘরে ঘুমাতে পারিনি। ফসলি মাঠে মশার কামড় সহ্য করে ছটফট করেছি। পুলিশের দৌঁড়ানি খেয়ে জঙ্গলে ঝোঁপঝাঁড়ে আশ্রয় নিয়েছি। এখন যুবদল নেতা রামপুরার ঘটনায় আমাদেরকে আসামী করেছে। গত দেড়-দুই বছরের মধ্যে কোন দিন রামপুরা যায়নি। অথচ মামলায় বলা হয়েছে সেখানে নাকি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা করেছি। বাদী যুবদল নেতা আজিজকে আমরা চিনিও না। এটা নিশ্চয় কোন মহল বিশেষের ষড়যন্ত্রের অংশ। আমাদের বিরূদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ থেকে মুক্তি চাই। মামলার বাদী নাসিরনগরের ৬ নং ধরমন্ডল ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ ৯৯ জন আসামীর মধ্যে অনেককেই না চেনার কথা স্বীকার করে বলেন, শাহজাদাপুর গ্রামের ওই তিন আসামীকেও আমি চিনি না। তাদের পদ পদবিও জানি না। খুঁজ খবর নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজনকেই আসামী করেছি। রফিকুল, সেলিম ও রাহুল আ’লীগের কোন পদে আছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে আজিজ বলেন দেখে বলতে হবে। গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দেওয়ার পরও আজিজ বলেন, আপনি এই মামলা ও আসামী সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কেন? শাহজাদাপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ইমরান খান বলেন, অজপাড়া গাঁয়ের বিএনপি’র তিন জনকে ঢাকার মামলায় আসামী করা খুবই দু:খ জনক। এই ধরণের কর্মকান্ড দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে। তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবী জানাচ্ছি। এ বিষয়ে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এম.এ হান্নান বলেন, এই মামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি কিছু করতে পারব বলে মনে হয় না।