রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার এবং ছাত্রদলের নারী কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় তাঁরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তাঁরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে রাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ছাত্রদল সবসময় চেষ্টা করি গতানুগতিক ধারার বাইরে রাজনীতি করতে। আমরা শিক্ষার্থীদের পালস বোঝার চেষ্টা করি৷ প্রথম বর্ষের অনেকেই আমাদের অনুরোধ করেছে যেন তারা রাকসুতে ভোটাধিকার পায় এটা আমরা নিশ্চিত করি৷ সে কারণেই আমাদের এই আন্দোলন। এখানে আমাদের নিজেদের কোনো স্বার্থ নেই। একই দাবিতে আজ আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।
রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রোববার যে ধ্বস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের নারী কর্মীদেরকে ছাড় দেয়নি। তারাও হেনস্তার শিকার হয়েছে। প্রশাসনকে এই ঘটনার দায় স্বীকার করতে হবে। আর আমাদের দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে নিলেই আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো। এছাড়া এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে। অভিযোগ এসেছে, রোববার রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় ছাত্রদলের কয়েকজন নারী কর্মীরা হেনস্তার শিকার হন।
রাবি শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাবিহা আলম মুন্নি বলেন, রোববার আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এরপর হঠাৎ একদল শিক্ষার্থী এসে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমাদের সাথে তর্ক করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমরা তাদের সাথে কথা বলতে গেলে এক নারী কর্মীর হিজাব ছিড়ে ফেলে যা সেফটিপিন দিয়ে আটকানো ছিলো। একপর্যায়ে আমাদের অন্যান্য নারী কর্মীদের সাথেও ধ্বস্তাধস্তি শুরু করে।
এবিষয়ে রাকসু নির্বাচন কমিশনের একাধিক সদস্যের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন ধরেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এটা নিয়ে আজ সকালে আমি নির্বাচন কমিশনারের সাথে বসেছি। এক্ষেত্রে নির্ধারিত তারিখ (২৫ সেপ্টেম্বর) রেখেই কোনোভাবে করা যায় কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এখনো এবিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রাকসু নির্বাচনে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও, ভাঙচুর ও পরবর্তীতে তালাবদ্ধ করেন রাবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার, ফাহিম রেজা, মেহেদী সজীবসহ আরো কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীরা তালা ভাঙতে উপস্থিত হয়৷ পরবর্তীতে শিবিরের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত হয়। এসময় ধ্বস্তাধ্বস্তির ঘটনায় প্রায় ৮ জনের মতো আহত হয়।