ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছে। নির্বাচনী গেজেট অনুযায়ী আলগী ও হামিরদি ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ‘সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন থেকে তিন দিনের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ম ম সিদ্দিক মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টা পরই, শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে আটক করে। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেন আটকের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিদ্দিক মিয়াকে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং এখনও থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। আন্দোলনের সমন্বয়করা জানিয়েছে, রাত দুইটার দিকে চান্দ্রা ইউনিয়নের বোনের বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ চেয়ারম্যানকে আটক করে নিয়ে যায় এবং আটক করার নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে তারা অবগত নন।
চেয়ারম্যানের আটক হওয়ায় আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালানো, গাছের গুঁড়ি ফেলা এবং অবরোধ কর্মসূচি চালাচ্ছে। তারা স্লোগান দিয়ে চেয়ারম্যানের মুক্তি ও প্রশাসনের পদক্ষেপের দ্রুততার দাবি জানাচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল (ভাঙ্গা সার্কেল) জানিয়েছেন, সাধারণ জনগণের ভোগান্তি কমাতে চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মহাসড়কে টহল দিচ্ছে। এক হাজারের বেশি র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে এবং কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাঙ্গাবাসীর আন্দোলন ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা গোলচত্ত্বর অবরোধ দিয়ে শুরু হয়। প্রশাসনের আশ্বাসের পর তিন দিনের আল্টিমেটামের মধ্যে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন পুনরায় শুরু হয়। এর মধ্যে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সর্বদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন থেকে টানা তিনদিন অবরোধের ঘোষণা দেয় সিদ্দিক মিয়া।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মানুষের ভোগান্তি এড়াতে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্তসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আন্দোলনের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, আটকের বিষয়টি দ্রুত সমাধান হলে আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।