রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা তিনটি পৃথক মামলায় আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। এই মামলাগুলোতে অভিযোগ করা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসামিরা অযোগ্য সত্ত্বেও সরকারি প্লট বরাদ্দ গ্রহণ করেছেন।
ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালতে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সাক্ষ্যগ্রহণের পঞ্চম দিনে মোট ৯ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে তাদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, সদর রেকর্ড রুমের সাব রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান, ঢাকার সাবেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মেজবাহউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক তৈয়বা রহিম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মুদ্রাক্ষরিক কামরুন্নাহার, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এবং কম্পিউটার অপারেটর মুক্তি তরফদার। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন আগামী ১৫ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, অন্যটিতে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জন এবং অপর মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে প্রধান আসামিদের মধ্যে অনেকেই পলাতক থাকায় তাঁদের অনুপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে আসামিরা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন। শেখ হাসিনার বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ৩ আগস্ট জারি করা হয়। সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও একই বছরের বিভিন্ন সময়ে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানায়, মামলাগুলোতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিভিন্ন পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে ২৬ আগস্ট, ২ সেপ্টেম্বর এবং ১৭ সেপ্টেম্বর ক্রমান্বয়ে মোট ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলাগুলোতে অভিযোগ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযোগ্য সত্ত্বেও সরকারি সম্পদ বরাদ্দ নিয়েছেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) জানান, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান এবং এ প্রক্রিয়া শেষে আদালত যথাযথভাবে তফসিল অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। মামলার অভিযোগে দায়ের করা ধারাগুলোতে রয়েছে দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর বিভিন্ন ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারা।